কত সংক্রমণ-মৃত্যুর পর বোধোদয় হবে, প্রশ্ন কাদেরের

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু জ্যামিতিক হারে বাড়ছে, অথচ মানুষের অসচেতনতায় হতবাক ওবায়দুল কাদের। কবে মানুষের বোধোদয় হবে, উদ্বেগ নিয়ে প্রশ্ন করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।

‌সোমবার রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল বলেছেন, ‘এত সংক্রমণ, এত মৃত্যু; এরপরও কি আমাদের বোধোদয় হবে না। উচ্চ আদালতে ভিড় এড়াতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তবুও আমাদের বোধ কাজ করছে না।’

করোনা যে কাউকে ছাড়ছে না সেই কথা মনে করিয়ে দিলেন ওবায়দুল, ‘করোনার সংক্রমণ ও বিস্তার দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নেতা, ব্যবসায়ী ও অন্য পেশার মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক প্রবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। ফ্রন্ট লাইনারদের মধ্যে ৩৬ জন চিকিৎসক, ১৪ জন পুলিশ সদস্য, ৭ জন সাংবাদিক, ৪ জন নার্স, ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও সহস্রাধিক সাধারণ মানুষকে আমরা হারিয়েছি।’

ওবায়দুল উদ্বেগ নিয়ে জানান, বিশ্বে নতুন সংক্রমণ ও রোগী বাড়ার দিক থেকে বাংলাদেশ এখন দশম স্থানে। এই লড়াইয়ে সরকার নানা সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ ক‌রে মন্ত্রী ব‌লেন, ‘পৃথিবীর প্রায় সব দেশই বিদ্যমান সুবিধা নিয়ে এ মহামারি মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। আমেরিকার মতো দেশে নৌবাহিনীর জাহাজকে হাসপাতাল বানাতে হয়েছে। ভারতে ট্রেনের বগিকে করতে হয়েছে হাসপাতাল।’

সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে মনে করেন ওবায়দুর, ‘আমি বলতে চাই, প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থায় জোর দেওয়া উচিত। এ ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যাতেও সীমাবদ্ধতা আছে। তবু সরকার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা যদি বিপদের গভীরতা ও মাত্রা বুঝে সচেতন না হই তাহলে তা জেনেশুনে আগুনে ঝাঁপ দেওয়া হবে। ক্ষণিকের উদাসীনতা, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা জীবনের চিরচেনা পথ থেকে আমাদের বিচ্যুত করে দিতে পারে।’

কারও সামান্য অবহেলা আরও শতশত জীবননাশের কারণ যেন না হয় সেই অনুরোধ করলেন ওবায়দুর, ‘আমরা সংক্রমণ লুকিয়ে না রেখে যেন সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করাই। নিজ উদ্যোগে আইসোলেশনে থাকি। জীবন এতই তুচ্ছ করোনার কাছে, তবুও আমরা সাবধান হচ্ছি না।’

ক‌রোনা মোকা‌বিলায় সীমাবদ্ধতার কথা তু‌লে ধ‌রে ওবায়দুল ব‌লেন, ‘আমাদের ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবনে যেমন সীমাবদ্ধতা থাকে, তেমনই রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রেও থাকে নানা সীমাবদ্ধতা। আসুন আমরা সরকারের নিরলস প্রয়াসে সহযোগিতা করি। তা হবে নিজেকেও নিজে সহযোগিতা করা।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ভরসা রেখে এই মন্ত্রী বলেছেন, ‘এ মহামারিতে নিজের জন্য নিজে সচেতন না হলে কেউ পথ দেখাতে পারবে না। আমরা সাহসী ও বীরের জাতি। প্রবল মানসিক শক্তি, দায়িত্ববোধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আল্লাহর উপর ভরসা রেখে নিজ নিজ ঘরকে সচেতনতার দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলি। আস্থা রাখি আমাদের বাতিঘর সংকটের সাহসী নেত্রী শেখ হাসিনার উপর।’

Share this post

scroll to top