এসএসসি পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ার প্রতিবাদে ২ কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাংচুর

চলমান এসএসসি পরীক্ষার গণিত বিষয়ে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ার প্রতিবাদে বুধবার মাদারীপুরের শিবচরের দুই কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে পরীক্ষার্থীরা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শেষে বিক্ষোভে প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

জানা যায়, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষার গণিত বিষয়ে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না দেয়ায় বুধবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা শেষে শিবচর নন্দকুমার মডেল ইনস্টিটিউশন ভেন্যুতে ব্যাপক ভাংচুর করে শিক্ষার্থীরা। এ খবর দ্রুত শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভেন্যুতে পৌঁছালে সেখানেও ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা ভাংচুর চালায়। এতে দুটি বিদ্যালয়ের ভবনের দরজা-জানালা, চেয়ার-টেবিল ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহতদেরকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।

শিবচর নন্দকুমার ভেন্যুতে প্রায় ৩০টি কক্ষ এবং শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভেন্যুর প্রায় ১০টি কক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের ভাংচুর ও তাণ্ডবের কারণে ছুটাছুটি করতে গিয়ে প্রায় ৫০ জন সাধারণ পরীক্ষার্থী আহত হয়। এ সময় পুলিশকে অনেকটা নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দীর্ঘদিন ধরে এই দুটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকদের প্রতিহিংসার কারণে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে মারমুখী আচরণ করে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসি পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষায় শিবচর নন্দকুমার ভেন্যুতে ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়। যে কারণে আমাদের গণিত পরীক্ষা খারাপ হয়। অপরদিকে শেখ ফজিলাতুন্নেছা সরকারি পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ভেন্যুতে বেশ কয়েকটি কক্ষ থেকে কেন্দ্র সচিবের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ক্যালকুলেটর নিয়ে দেয়া হয়।

অভিভাবকরা জানান, শেখ ফজিলাতুন্নেছা বিদ্যালয় ও নন্দকুমার ইনস্টিটিউশনের দুই প্রধান শিক্ষক প্রায় প্রতিবছরই অবৈধ সুযোগ নিয়ে তাদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল দেখানোর জন্য অসুস্থ প্রতিযোগিতা করেন। ওই দুই শিক্ষকের স্নায়ুযুদ্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে না পেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ধারণা করছে। ক্যালকুলেটর ছাড়া পরীক্ষার হলে ঢুকে অনেক শিক্ষার্থী প্রায় আধা ঘন্টা পর্যন্ত কান্নাকাটি করেছে।

কেন্দ্র সচিব মো: রফিকুল ইসলাম ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করেছেন।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ে ১১০২ জন শিক্ষার্থী ও নন্দকুমার ভেনুতে ৯৮০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার এসএসসি-২০২০ সাধারণ গণিত পরীক্ষায় ক্যালকুলেটর নিয়ে প্রবেশের বাধা দেয়া হয়। গনণত পরীক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা বুধবার আইসিটি পরীক্ষা শেষে উত্তেজিত হয়ে এসএসসি পরীক্ষার দুই ভেন্যুতে ভাঙচুর করে।

Share this post

scroll to top