ইসলামকে সমাজতন্ত্রের ধাঁচে গড়ে তুলবে চীন!

আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ইসলামকে তথাকথিত চীনা ঘরানার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে নতুন আইন করতে যাচ্ছে বেইজিং। দেশটিতে মুসলমানদের ধর্ম পালনে এটি নতুন বাধা হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার আটটি ইসলামী সংস্থার সাথে সরকারি কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর নতুন আইনের এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছে চীনের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস।

তবে আলোচনার বিস্তারিত এবং এসব ‘ইসলামী সংস্থা’র পরিচয় জানা যায়নি। বৈঠকে দুই পক্ষই ‘ইসলামকে সমাজতান্ত্রিক নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উপায়ে পরিচালিত করা এবং চীনা ঘরানা অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে একমত হয়েছে’, জানিয়েছে তারা। শি জিনপিং চীনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ‘মতবাদে বিশ্বাসী গোষ্ঠী’র ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এ সাধারণ সম্পাদককে মাও সেতুং এরপর দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পশ্চিমা মানবাধিকার সংগঠনগুলোও চীনের অনেক অংশে মুসলমানদের ধর্ম পালনে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে আসছে। কিছু কিছু এলাকায় নামাজ-রোজার পাশাপাশি দাড়ি রাখায় বা হিজাব পরায় অনেককে গ্রেফতারের হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দেশটির ১০ লাখেরও বেশি মুসলিমকে বিভিন্ন অস্থায়ী ক্যাম্পে আটক রেখে ধর্ম পালনে বাধা এবং জোর করে কমিউনিস্ট মতাদর্শে আস্থাশীল করার চেষ্টা হচ্ছে বলেও ধারণা জাতিসঙ্ঘের বিভিন্ন সংস্থার। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ‘জাতিগত শুদ্ধি’ অভিযান চালানোরও অভিযোগ করেছে। গত বছরের আগস্টে ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের সম্পাদকীয়তেও চীনের মুসলমানদের ওপর চাপ ও হয়রানির প্রসঙ্গ এসেছে। মার্কিন এ গণমাধ্যমটি বলেছে, চীনের মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে, বিশ্ব তা ‘এড়িয়ে যেতে পারে না’।

চীনের বিভিন্ন মসজিদ থেকে গম্বুজ ও চাঁদ-তারার প্রতিকৃতি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানে মাদরাসার পাশাপাশি আরবি ভাষা শেখানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে; শিশুদের ধর্মীয় চর্চাতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অন্য একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে। চীন অবশ্য শুরু থেকেই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বেইজিং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্ম ও সংস্কৃতির সুরক্ষা দিচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা। দেশটির দাবি, তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ধর্ম ও সংস্কৃতির সুরক্ষা দিচ্ছে। সরকারিভাবে এমন দাবি করলেও শুধু গত সপ্তাহেই মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ইউনান প্রদেশে তিনটি মসজিদ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চীনের সংখ্যালঘু হুই জাতিগোষ্ঠীর মুসলমানেরা মসজিদগুলোর নির্মাণ করেছিল।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top