আদালতে চুপ ছিলেন খালেদা জিয়া

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়েছিল কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালতে ১২টা ৪০ মিনিটে বেগম খালেদা জিয়াকে উপস্থিত করা হয়।

আদালতে পুরো সময় নিশ্চুপ ছিলেন বেগম জিয়া। পুরো সময় জুড়েই কোন কথা বলেনি। এদিন তিনি গোলাপী শাড়ি পড়ে হুইল চেয়ারে বসে আদালতে হাজির হন। এ সময় পা থেকে কোমর পর্যন্ত সাদা ওড়না দিয়ে ঢাকা ছিল তার। শুনানি শেষে বেলা ২টার দিকে তাকে আবারও কারাগারে নেয়া হয়।

এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি একই মামলার শুনানিতে আদালতে যেখানে তাকে বসানো হয়, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন খালেদা জিয়া। একটু দূরে পৃথক স্থানে বসানো প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আমি তো কিছুই দেখছি না। আমি তো আপনাকেও (বিচারক) দেখছি না। এই দেয়াল তো এর আগে ছিল না, এখন কোথা থেকে এলো। আমি এখানে থাকব না, আমি এখান থেকে চলে যাব।’

তবে আজ তিনি পুরো সময় চুপ ছিলেন। হুইল চেয়ারে বসে আদালতের কার্যক্রম দেখেছেন।

২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। মামলার পরদিন খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয় জরুরি ক্ষমতা আইনে। পরের বছর ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয়া হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।

মামলার ২৪ আসামির মধ্যে ৬ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভূইয়া, এম কে আনোয়ার, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো।

অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপি দলীয় সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, প্রয়াত মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (অব.) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ, গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, গ্যাটকোর পরিচালক সৈয়দ তানভির আহমেদ ও সৈয়দ গালিব আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান এএসএম শাহাদত হোসেন, বন্দরের সাবেক পরিচালক (পরিবহন) এ এম সানোয়ার হোসেন ও বন্দরের সাবেক সদস্য লুৎফুল কবীর।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top