আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ১২ দফা নির্দেশনা দিবে ইসি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিসহ নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বৈঠক করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা, নির্বাচনী সামগ্রীর হেফাজত করা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেওয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষ সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা থাকবে।’

ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। সভা থেকে নির্বাচনের আগে-পরে ও ভোটের দিনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে ১২ দফা নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

হেলালুদ্দীন আরো বলেন, ‘এর মধ্যে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাসভবন ও অফিস কার্যালয়ে নিরাপত্তা জোরদার করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও রয়েছে।’

সচিব বলেন, ‘বিশেষ সভা থেকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনপূর্ব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় স্থির করা, নির্বাচনী আইনের বিধান প্রতিপালনের পরিবেশ তৈরি করা, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করার মত বিষয় আছে। এ ছাড়া যাতে সব প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগ পান, নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে নির্বিঘ্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারেন- সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হবে।’

ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়ে যায়। বৈধ অস্ত্রের অপব্যবহারও বেড়ে যায়। এমনকি কিছু গোষ্ঠী বা আন্ডারগ্রাউন্ডের সন্ত্রাসীদের তৎপরতাও বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এগুলো রোধে পুলিশের করণীয় ঠিক করা হবে। এ সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার মাত্রা যাতে না বাড়ে সে বিষয়টিতেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হবে। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর চার কমিশনার উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া এই সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, উপমহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপাররা  (এসপি) উপস্থিত থাকবেন।

ইসি সচিব আরো বলেন, ‘সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ সতর্কতা জারি করা হবে। জঙ্গি চক্র যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে- এ বিষয়গুলোতেও আলাদা নির্দেশনা থাকবে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশেষ সভায় সেনাসদরের কোনো প্রতিনিধি থাকবে না জানিয়ে সচিব বলেন, ‘সেনা প্রতিনিধিদের প্রতীক বরাদ্দের পর আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে ডাকা হবে। যে সভাটি আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।’

তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বিষয়ে ইসিতে দেওয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে সচিব বলেন, ‘আমরা সবই কমিশনের নজরে আনছি। বিএনপি আজ যে চিঠি দিয়েছে সেটি নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় আলোচনা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।’

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের নতুন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দেবেন কি না প্রশ্নে সচিব বলেন, ‘এ ধরনের কিছু নির্দেশনা দেওয়া হবে।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top