অবাক চোখে চারপাশ দেখে ময়মনসিংহে মৃত মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া ফাতেমা

দুই হাত নাড়ছে, বড় বড় চোখে চারপাশ দেখছে। একবার চোখ ঘুরিয়ে ডানে দেখছে, আবার বামে। হয়তো বুঝার চেষ্টা করছে নতুন জীবন কেমন। ছোট শিশুরা অচেনা পরিবেশ কিংবা মানুষ দেখলে কান্না করে, তবে ফাতেমা ব্যতিক্রম। ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মায়ের পেট ফেটে ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশু ফাতেমার আশ্রয়স্থল এখন রাজধানীর আজিমপুর ছোট মনি নিবাসে। সেখানে আরও বিভিন্ন বয়সের ২৮টি শিশুর সঙ্গে তার নিবাস।

গত ১৬ জুলাই ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয় এক শিশু। এ সময় মারা যান শিশুটির বাবা জাহাঙ্গীর আলম, মা রত্না বেগম ও ছয় বছরের বোন সানজিদা। এরপর শিশুটিকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয় নগরীর বেসরকারি লাবীব হাসপাতালে। সেখানে জন্ডিসসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন, ত্রিশাল উপজেলা প্রশাসন ও সমাজসেবা অধিদফতরের একাধিক সভা করে শিশু ফাতেমাকে ঢাকার আজিমপুরে ছোট মনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিশুটি চিকিৎসাসহ ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে ছোটমনি নিবাসে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে ছোট মনি নিবাসে গিয়ে দেখা যায়, ফাতেমা তার দোলনায় শুয়ে আছে। দুই হাত নাড়ছে, আর অবাক চোখে তাকিয়ে চারপাশ দেখছে। একদম সুস্থ স্বাভাবিক একটি শিশুর মতোই তার আচরণ।

ফাতেমার দেখভাল করছেন রাশিদা। তিনি জানান, ফাতেমা বেশ ভালো আছে। সময়মতো খাবার দিই আমরা। কান্নাকাটি করে না একদম।

একটু দেখতে চাইলে তিনি কোলে করে ফাতেমাকে নিয়ে আসেন ভেতর থেকে। তখনও ফাতেমা অবাক চোখে চারপাশ দেখছে। ছোট ছোট হাতগুলো নাড়ছে।

এদিকে ফাতেমার আইনগত অভিভাবককে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) গঠিত ট্রাস্টি বোর্ড। গত ৭ আগস্ট হাইকোর্ট এ অর্থ পরিশোধে ট্রাস্টি বোর্ডকে একমাস সময় দিয়েছিলেন।

Share this post

scroll to top