অজানা রোগে মরে গেল এগার’শ হাঁস

আজানা রোগে মরে গেল দরিদ্র কৃষক স্বপন মিয়ার এক হাজার ১০০টি হাঁস। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার নয়ানগর বাউশালী গ্রামের এই কৃষক বলেন, ‘হঠাৎ করে হাঁসগুলো খিঁচুনি দিয়ে মরতে শুরু করে। এতো অল্প সময়ে হাঁসগুলো মারা যাওয়ায় আমি চিকিৎসা করানোরও সুযোগ পাইনি।’

জানা গেছে, সংসারের অভাব ঘোঁচাতে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন স্বপন। পরে চাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে কৃষিকাজের পাশাপশি শুরু করেন হাঁস পালন। তাতে বেশ লাভবানও হন তিনি।

সংসারে সচ্ছলতা আনতে এবারো চৈত্র মাসের শেষের দিকে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রামপুর থেকে বাকিতে এক হাজার ২০০ হাঁসের বাচ্চা আনেন। ৩০ টাকা পিস হিসেবে বাচ্চাগুলো আনতে খরচ হয় ৩৬ হাজার টাকা। ওই সময় বাচ্চাগুলোর বয়স ছিল একদিন। দুই মাস পালনের পর এখন হাঁসগুলো বেশ বড় হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করেই অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বপন মিয়ার এক হাজার ১০০ হাঁস মারা যায়।

স্বপন মিয়া জানান, হাঁসগুলো পালনে বাড়ির পাশে সুরিয়া নদীর পাড়ে মাচা ও নেটের বেড়া দিয়ে খামার তৈরি করেন। বাচ্চার খাবার কেনার জন্য এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। তিন দিন পরই হাঁসগুলো বাজারে বিক্রি করে দেয়ার কথা ছিল। এ অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যার পর হাঁস খামারে তোলেন। ওইদিন রাতেই অজ্ঞাত রোগে ছটফট করে নয় শতাধিক হাঁস মারা যায়। পরদিন মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত আরও প্রায় ২০০টি হাঁস মারা যায়।

তিনি বলেন, ‘হাঁস পালন বাবদ এ পর্যন্ত এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। সব টাকাই ঋণের ওপর নেয়া। এখন সরকারের সহায়তা ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই।’

তবে গৌরীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. আব্দুল করিম বলেন, ‘চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং সঠিক নিয়মনীতি না জেনে হাঁস পালন করায় অনেক সময় রোগাক্রান্ত হয়ে হাঁস মারা যায়। স্বপন যদি আমাদের পরামর্শ নিয়ে হাঁস পালন করতেন তাহলে হয়তো এই ক্ষতি হত না।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বপন যদি হাঁস নিয়ে আমাদের কাছে আসেন তাহলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে। এছাড়া আমাদের জনবল কম। তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজখবর নেয়ার সুযোগ নেই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ জানান, খামারি স্বপনের বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি সে যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে তাকে লোন দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

Share this post

scroll to top