অজগর মেরে ফেসবুকে উল্লাস

Snakeবিশাল আকৃতির এক অজগর হত্যার পর ছবি পোষ্ট করা হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু উল্লাসের এই ছবি ছাড়ার মুহুর্তের মাঝেই ভাইরাল হয়ে যায়। এই নিয়ে রীতিমতো আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ।

গতকাল নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর পানিতে ভেসে আসা একটি অজগর সাপকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন স্থানীয়রা

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিজয়পুর বিজিবি সীমান্ত ক্যাম্প থেকে কিছুটা সামনে রানীখং ফুটবল খেলার মাঠে ঝোপের আড়ালে বড় কিছু নড়াচড়া দেখতে পায় স্থানীয় এক যুবক । এ সময় দৌড়ে তার সহপাঠীদের বিষয়টি জানালে তারাও ছুটে এসে ঝোপের ভিতর অজগরের মাথাতেই দেখতে পায় । পরে আশপাশের স্থানীয় প্রায় ২৫/২০ লোকজন বাঁশ কাঠ দিয়ে মাথা ও শরীরে নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলে অজগর টিকে ।

হত্যার পর স্থানীয় যুবকরা উল্লাস করে নানান অঙ্গভঙ্গিতে মৃত অজগরের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পোস্ট করেন । এরপর থেকেই ওই এলাকায় সাপটিকে মারায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ছবিগুলো দেখে নড়েচড়ে বসে উপজেলার পরিবেশ ও পশু প্রেমীরা। সাপটিকে মারায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ঝড় বইছে দুর্গাপুরের সতেচন মহলে ।

স্থানীয়দের ধারণা গত কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভেসে এসে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে ছিল লুকিয়ে ছিলো প্রায় ১২ ফুট লম্বা অজগরটি।

এক সময় দুর্গাপুরের সীমান্তবর্তী এলাকা সহ বিভিন্ন স্থানে অজগর সহ বিভিন্ন প্রকার বন্যপ্রাণীর দেখা মিলত। কিন্তু পাহাড় কেটে বাড়ি ঘর নির্মাণ ও বন উজাড় করা আবাসস্থল হারাচ্ছে বন্যপ্রাণীরা। তার ওপর প্রতিনিয়তই নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে বন্যপ্রাণীদো। এই কারণেই দুর্গাপুর পাহাড়ি এলাকা হওয়া সত্তে¡ও বিভিন্ন প্রকারের বন্য প্রাণী আজ পুরোপুরি বিলুপ্ত। আর যেগুলোই বা আছে তা রক্ষা না করা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কাছে প্রাণীকুল অনেকটাই অজানা থাকবে বলে মনে করেন বে পশুপ্রেমী ।

এ বিষয়ে কুল্লাগড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমা জানায়, আমি বিষয়টি শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে অজগরটি উদ্ধারের চেষ্টা চালায়। কিন্তু ততক্ষণে স্থানীয় লোকজন সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম জানান, সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ওই এলাকায় সাপ থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সাপটিকে হত্যা করা স্থানীয়দের ঠিক হয়নি। বিষয়টি শোনার পর আমি তাৎক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি এবং স্থানীয়দের সতেচন করেছি যাতে পরবর্তীতে বন্যপ্রাণী হত্যা থেকে তারা বিরত থাকে। এরকম কোনো বন্যপ্রাণী উদ্ধার হলে তাৎক্ষনিক আমাদের জানালে আমরা তা উদ্ধার করে পুনরায় অবমুক্ত করার ব্যবস্থা করবো।

Share this post

scroll to top