৯/১১ হামলার ১৮ হাজার গোপন নথি চুরি!

চুরি গেল ৯/১১ হামলা সংক্রান্ত গোপন নথিপত্র। একাধিক বিমা ও আইনি সংস্থার সাইট থেকে সেগুলো চুরি করেছে হ্যাকাররা। মোট ১৮ হাজার গোপন নথি হাতিয়ে নিয়েছে তারা। মোটা টাকা না পেলে সব প্রকাশ করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।

একজন হ্যাকারই গোটা ঘটনা ঘটিয়েছে, নাকি তাতে যুক্ত রয়েছে অনেকে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। কারণ বর্ষবরণের রাতে হুমকি আসে ‘দ্য ডার্ক ওভারলর্ড’ নামের একটি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে। চুরি করা তথ্য ও নথি শেয়ারের ওয়েবসাইট পেস্টবিনে ১৮ হাজার নথি চুরির কথা ঘোষণা করে তারা। তাতে ‘হিসকক্স’, ‘লয়েডস অফ লন্ডন’-এর মতো বেশ কিছু বিমা সংস্থা এবং আইনি সংস্থা ‘হাস্ক ব্ল্যাকওয়েল’-এর নাম উল্লেখ করে।

নিউ ইয়র্কের রিয়েল এস্টেট সংস্থা ‘সিলভারস্টাইন প্রপার্টিজ’, ২০০১ সালে হামলার আগে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের মালিকানা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যাদের হাতে ছিল, তাদের কাছ থেকেউ গুরুত্বপূর্ণ নথি হাতিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করে ‘দ্য ডার্ক ওভারলর্ড।’তারা জানায়, ৯/১১ হামলা নিয়ে গোপনীয়তা রক্ষার চুক্তি আদানপ্রদান হয়েছিল ওই সংস্থাগুলোর মধ্যে। তাদের ই-মেইল হ্যাক করে সেইসব নথিপত্র হাতে চলে এসেছে দ্য ডার্ক ওভারলর্ড-এর। মোটা টাকা পেলে সব নথি গোপন রাখা হবে। নইলে প্রকাশ করে দেয়া হবে জনসাধারণের জন্য।

তবে নগদে নয় ক্রিপটোকারেন্সি বিটকয়েনে পুরো টাকাটা দিতে হবে বলে শর্ত রেখেছে তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবক’টি রাজ্যসহ আইসিস এবং আলকায়দার মতো উগ্রবাদী সংগঠনকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে তারা। মোটা টাকা পেলে যে কাউকেই সব নথি বিক্রি করে দেবে। তাদের ঘোষণার পর বুধবার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে চুরি যাওয়া নথিপত্রের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। যাতে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নিয়ে কথোপকথন সামনে আসে। তবে তা থেকে গোপন চুক্তির ব্যাপারে সবিস্তারে কিছু জানা যায়নি।

নথিপত্র হ্যাকের খবর নিশ্চিত করেছে ‘হিসকক্স’। সংস্থার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের আইনি পরামর্শ দেয় একটি সংস্থা। ৯/১১ হামলা সংক্রান্ত মামলা-মকদ্দমার দায়িত্বে ছিল তারা। গত এপ্রিল মাসেই ওদের প্রযুক্তি হ্যাক হয়ে গিয়েছে বলে জানতে পারি আমরা। তবে পরিকাঠামোগতভাবে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত নই আমরা। তাই সরাসরি আমাদের থেকে কিছু হাতিয়ে নিতে পারেনি হ্যাকাররা।’’ মার্কিন ও ব্রিটিশ প্রশাসনের সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্তে অংশ নেবে বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে ‘হিসকক্স’-এর পক্ষ থেকে। তবে নথি চুরি যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছে ‘হাস্ক ব্ল্যাকওয়েল’ সংস্থা। এখন পর্যন্ত সেরকম কিছু চোখে পড়েনি বলে দাবি করেছে ‘লয়েডস অফ লন্ডন’ও। তবে তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওসামা বিন লাদেনের নির্দেশে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলা চালায় আলকায়দা সদস্যরা। তাতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। ২০১৯ সালের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। যার পুরোটাই বীমা সংস্থাগুলোর ঘাড়ে। কিন্তু ওই বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির দায় নিতে রাজি হয়নি কেউই। তা নিয়ে মামলা-মকদ্দমা চলছে আজও।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top