৪০ বছর পর পরিবারকে খুঁজে পেলেন ময়মনসিংহে হারিয়ে যাওয়া মিনতি

ছয় বছর বয়সে ময়মনসিংহে বেড়াতে এসে হারিয়ে যান মিনতি। এরপর মসলেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি নিজ বাড়িতে নিয়ে তাকে লালন-পালন করেন। এভাবেই কেটে যায় ৪৬ বছর।  মিনতির বয়সও এখন ৪৬ বছর। বর্তমানে তিনি চার কন্যাসন্তানের মা। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। চার দশক পর মিনতি তার বাবা-মাকে ফিরে পেয়েছেন।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের রানিগ্রাম এলাকার বাছের আলীর হারিয়ে যাওয়া মেয়ে মিনতি। পরিবারের সন্ধান পেয়ে রোববার (১৭ অক্টোবর) রাতে আপন ঠিকানায় ফিরে যান তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মিনতিরা চার ভাইবোন। তাদের মধ্যে মিনতি সবার ছোট। ছয় বছর বয়সে চাচাতো বোন ও দুলাভাইয়ের সঙ্গে ময়মনসিংহে বেড়াতে আসেন। দুলাভাইয়ের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ স্টেশনে হারিয়ে যান মিনতি। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে বোন ও দুলাভাই হতাশ হয়ে ফিরে যান।

মিনতি বলেন, আমাকে কান্না অবস্থায় পেয়ে মসলেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি তার বাসায় নিয়ে যান। তার বাড়িতেই মেয়ের মতো বড় হতে থাকি। প্রাপ্তবয়স্ক হলে গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী বুরহান উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয়।

বর্তমানে চার কন্যাসন্তানের মা মিনতি। তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বড় মেয়েজামাই ঢাকায় থাকেন। তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের উদ্যোক্তা শাহরুখ নয়নের।

মিনতির মেয়েজামাইয়ের তথ্য অনুযায়ী নয়নের প্রচেষ্টায় হারানো পরিবারকে ফিরে পেয়েছেন মিনতি।

শাহরুখ নয়ন বলেন, একসঙ্গে পড়াশোনা করার সুবাদে মিনতির মেয়েজামাইয়ের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তার কাছ থেকেই শোনেন মিনতির জীবনের গল্প। পরে মিনতির সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন রাজশাহী জেলার কাছিকাটা গ্রামে তার বাপ-দাদার বাড়ি। সেই সূত্র ধরে নয়ন ওই এলাকায় কয়েকবার যান এবং লিফলেট বিতরণ করেন।

এরপর ওই এলাকা থেকে ফোন আসা শুরু হয়। মিনতি মোবাইল ফোনে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ছোটবেলার কিছু চিহ্ন ও স্মৃতির কথা জানান। সেই সূত্র ধরেই মা-বাবার সন্ধান পান মিনতি। অবশেষে রোববার রাত ৮টার দিকে তিনি তার পরিবারের কাছে ফিরে যান।

Share this post

scroll to top