লকডাউন নিয়ে আলোচিত সেই পথশিশুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না

Lockdown-Child-Marufরাজধানীর জর্জকোর্ট এলাকায় একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের লাইভ চলাকালীন হঠাৎ ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাতারাতি আলোচনায় আসে পথশিশু মারুফ। সে থাকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক ও জর্জকোর্ট এলাকায়।

কিন্তু বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) থেকে মারুফকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। সে কোথায় আছে তা কেউ বলতে পারছে না। এমনকি তার খোঁজখবর রাখা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছেও কোনো হদিস নেই।

এর আগে, বুধবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে শিশুটির খোঁজে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তখন জানা যায়, রাত ৩টার দিকে একটি সাদা গাড়িতে কয়েকজন লোক এসে তাকে পাঁচশ টাকা ও জামা কাপড় দেবে বলে গাড়িতে করে রায়ের সাহেব বাজারের দিকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।

তবে, ওইদিন সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেছিলেন, তাকে কারা নিয়ে গেছে আমরা জানি না। আমাদের জানিয়ে ওই পথশিশুকে কেউ নিয়ে যায়নি। সন্ধ্যার পর তাকে আবার ভিক্টোরিয়া পার্কে পাওয়া যায়। একটা সাদা রঙের প্রাইভেটকারে একটি বক্সে চাল, ডাল, তেল, আটাসহ তাকে দিয়ে রেখে গেছে বলে জানা যায়। কিছুক্ষণ পরে তার ওই চাল-আটা বাকি পথশিশুরা টানাটানি করে নিয়ে যায় বলেও জানান তিনি।

আর বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজের ব্যাপারে সূত্রাপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরাও শিশুটিকে খুঁজছি, কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাইনি।’

এলাকাবাসী বলছে, বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় ছিন্নমূল শিশুদের সঙ্গেই থাকে মারুফ। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে তাকে আর এখানে দেখা যায়নি। মারুফ যাদের সঙ্গে থাকে তারাও মারুফের কোনো খোঁজ জানে না। এরইমধ্যে তারা মারুফকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজেছে, কিন্তু কোথাও পায়নি বলে জানায় মারুফের সঙ্গী পথশিশু রুস্তম।

এর আগে, সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সময়ের কণ্ঠস্বর নামে একটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের প্রধান প্রতিবেদক পলাশ মল্লিক ফেসবুকে লাইভ করার সময় ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে পড়ে পথশিশু মারুফ। সে বলে, ‘আচ্ছা, এই যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষ খাবে কী? মাননীয় মন্ত্রী যে লকডাউন দিয়েছে এটা একটা ভুয়া। থ্যাংক ইউ!’

পথশিশুদের কাছ থেকে জানা যায়, আগে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় সরকারের পক্ষ থেকে খাবার দেওয়া হতো, এখন দেওয়া হয় না। লকডাউনের আগে মানুষের কাছে চেয়ে নিয়ে খেত, এখন সে সুযোগও কম। রাস্তায় মানুষ নেই, দোকানপাটও বন্ধ, মানুষের কাজ নেই। ‘আমাদের কে খাবার দেবে? কে টাকা দেবে? আমরা খাব কী?’ এমন প্রশ্ন মারুফসহ অনেক পথশিশুর। সূত্র: সময় নিউজ

Share this post

scroll to top