মোদিকে তিরন্দাজি বা শুটিংয়ের চ্যালেঞ্জ মাসুদ আজহারের

কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় দায় স্বীকার করেছিল জইশ-ই মোহাম্মদ। পরে ভারত এর বদলা নিতে ২৬ ফেব্রুয়ারি লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের ভেতর ঢুকে পড়ে।

এ অবস্থায় পাকিস্তান দাবি করেছিল, পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর ধাওয়া খেয়ে নিজ দেশে ফিরে গেছে ভারতের যুদ্ধবিমান। কোনো ক্ষয়ক্ষতিই তারা করতে পারেনি। অন্যদিকে ভারতের দাবি ছিল, তারা প্রায় ১০০০ কোটি বোমা বর্ষণ করে পাকিস্তানে জইশ-ই মোহাম্মদসহ বেশ কিছু সংগঠনের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এ হামলায় নিহত হয়েছে এসব সংগঠনের সাড়ে তিন শতাধিক সদস্য। পাকিস্তান বরাবরই এ দাবি অস্বীকার করে আসছিল।

ষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুলেছে জইশ-ই মোহাম্মদ নিজেই। সংগঠনটির মুখপত্র আল-কালামে বলা হয়, পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বোমাবর্ষণে দলের কারো কোনো ক্ষতি হয়নি, সবাই জীবিত এবং সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। সংগঠনটির নেতা মাসুদ আজহারই এ দাবি করেন। এর পাশাপাশি তিনি নিজের লেখায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তিরন্দাজি অথবা শুটিংয়ের প্রতিযোগিতায় নামার চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দেন।

জইশ-ই মোহাম্মদের মুখপত্র হিসেবে আল-কালাম পুরো বিশ্বেই পরিচিত। সেখানে ‘সাদি’ ছদ্মনামে লিখেন সংগঠনটির প্রধান মাসুদ আজহার। আল-কালামের সাম্প্রতিক সংখ্যায় পুলওয়ামা হামলা এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে লিখেছেন মাসুদ আজহার নিজেই। এতে তিনি দাবি করেন, বালাকোটে ভারতীয় হামলায় আমাদের আদৌ কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং তিনি দাবি করেন, ভারত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।

মোদিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, আমি নরেন্দ্র মোদীর মতো নই। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ একজন মানুষ। আমি নরেন্দ্র মোদীকে তিরন্দাজি অথবা শুটিং প্রতিযোগিতায় নামার আহ্বান জানাচ্ছি। তা হলেই বোঝা যাবে কে বেশি ফিট।

তার লেখার এক পর্যায়ে তিনি ঠাট্টা করে লিখেন, আমার কিডনি ও লিভারও এখন খুব ভাল অবস্থায় আছে এখন। শুধু তাই নয় তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে অসুস্থতার জন্য জইশের কেউ হাসপাতালে যায়নি। কখনো কোনো চিকিৎসকেরই প্রয়োজন পড়েনি। এর পেছনে কুরআন নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাকেই কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন তিনি। মাসুদ আজহার দাবি করেন, এই কারণে মানসিক উত্তেজনা বা ডায়াবেটিস থেকেও তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত।

জইশ-ই মোহাম্মদের সাপ্তাহিক এই মুখপত্রটিতে মাসুদ আজহার আরো লিখেছেন, পুলওয়ামার ওই ঘটনা আসলে স্বাধীনতার যুদ্ধ। কাশ্মিরিদের হৃদয়ে আগুন জ্বেলে দিয়েছে পুলওয়ামার আত্মঘাতী হামলাকারী আলি আহমদ দার। এই আগুন সহজে নিভবে না। পুরো কাশ্মিরেই একসময় তা ছড়িয়ে পড়বে।

ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতের আধা-সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়। কাশ্মিরের স্বাধীনতা দাবিকারী জইশ-ই মোহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। ভারত এ হামলার জন্য অবশ্য পুরো পাকিস্তানকেই দায়ী করে বসে। ইসলামাবাদ নয়াদিল্লির এ অভিযোগের প্রমাণ দেয়ার আহ্বান জানায়। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top