মাশরাফির প্রতিপক্ষ হয়ে মাঠে নামছেন মুশফিক

জাতীয় দলের প্রতি ম্যাচে যাদের কাঁধে কাঁধ রেখে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করার পরিকল্পনা আটা হয়, আজ থেকে আগামী একটা মাস তারাই প্রতিপক্ষ। কারণ বিপিএলের পর্দা উঠছে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে। প্রথম ম্যাচে মাশরাফির রংপুর রাইডার্সের প্রতিপক্ষ মুশফিকের চিটাগং ভাইকিংস। ইতোমধ্যেই টস হয়ে গেছে। মাশরাফিদের ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুশফিক।

বিপিএলের অলিগলি সব চেনা মাশরাফির। অন্য দিকে এই টুর্নামেন্টে বরাবরের মতো নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন মুশফিক। পাঁচ আসরে চারবার মাশরাফির হাতে উঠেছে শিরোপা। আর মুশফিকের সর্বোচ্চ দৌড় ছিল সেমিফাইনাল পর্যন্ত। পাঁচ আসরে চার শিরোপা জিতে মাশরাফি অতি আত্মবিশ্বাসী নন, রংপুরকে আরেকটি শিরোপা উপহার দিতে চান। ‘আত্মবিশ্বাস তো থাকতেই হবে খেলার জন্য। অতি আত্মবিশ্বাসের প্রশ্নই আসে না।’

প্রতিপক্ষ চিটাগং ভাইকিংস নিয়ে মাশরাফি বলেন, প্রথম ম্যাচ সব দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। টি-২০তে এক দু’জন ক্রিকেটার ম্যাচ বদলে দেয়। নিদাহাস ট্রফিতে মুশফিক একা একটা ম্যাচ জিতিয়েছেন। খুব ভালো দল নিয়ে টুর্নামেন্ট বা নির্দিষ্ট ম্যাচ জিতবেন, এটা আশা করা ভুল। ওদের দলও অনেক শক্ত। একই সাথে বলব, যেই সাতটা দল আছে। তাদের মাঝে পার্থক্য উনিশ-বিশ। মনে হচ্ছে, টুর্নামেন্টে ভালো খেলা হবে।
বিপিএলের শেষ আসর বাদে প্রতি আসরে মাশরাফিকে শিরোপার মুকুট নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছে। শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবারো, ‘শেষটা ছাড়া সব আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের সব সময়ই আলাদা চাপ থাকে।’

মুশফিকের অবশ্য এরকম কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। রয়েছে শিরোপায় নাম লেখানোর চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি এবার গুরুদায়িত্বও পেয়েছেন মুশফিক। চিটাগংকে এবার নেতৃত্ব দেবেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চিটাগংকে এগিয়ে নিতে চান মুশফিক, ‘এটা সম্মানের ব্যাপার, উপভোগের ব্যাপার। একই সাথে চ্যালেঞ্জিংও বটে। কারণ প্রত্যাশা বেশি থাকে। দলের মালিকপক্ষ বা সমর্থকদের পক্ষ থেকেও চাপ থাকে। অনেক দিন পর দায়িত্ব এসেছে। চেষ্টা করব পারফরম্যান্স দিয়ে চিটাগংকে গত আসরের চেয়ে ভালো একটা ফলাফল দেয়ার। অধিনায়ক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলে দলের জন্য কাজ সহজ হয়। এবারো সে চেষ্টা থাকবে।’

কাগজে-কলমে মুশফিকের চিটাগংয়ের থেকে অনেক এগিয়ে মাশরাফির রংপুর। তবে নিজের দল নিয়ে চিটাগংয়ের অধিনায়ক আত্মবিশ্বাসী। তার বিশ্বাসে চমক দেখাতে পারবে বন্দরনগরীর দলটি, ‘প্রথম ম্যাচ, সবাই চাইবে ভালোভাবে শুরু করতে। আমরাও তাই চাই। রংপুর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কিন্তু তারাও কাল নতুন করে শুরু করবে। কাগজে-কলমে আমাদের দলটা এত শক্তিশালী না হলেও আমাদের কিন্তু কয়েকজন কার্যকর টি-২০ খেলোয়াড় আছেন। যাদের নিয়ে খুব ভালো একটা ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করতে পারব বলে বিশ্বাস। অবশ্যই শুরুটা গুরুত্বপূর্ণ। এটিতেই আপাতত মনোযোগ। মাঠে পরিকল্পনা প্রয়োগ করতে পারলে আমাদের বিশ্বাস চিটাগং চমক দেখাতে পারবে।’

মুশফিক স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাছ থেকে বেশি দায়িত্বপূর্ণ পারফরম্যান্স চান। তার কথায়, ‘বিপিএলে বিদেশীরা হয়তো দারুণ পারফরম করে, কিন্তু স্থানীয়দের অবদানও খুব ভালো। প্রতিটি দলেই খুব ভালো স্থানীয় খেলোয়াড় আছেন। আমাদের দলেও ব্যাটিং-পেস ও স্পিন অ্যাটাকে ভালো খেলোয়াড় আছে। দলের সবাই মিলে অনুশীলন করতে পারলে ভালো হতো। সময়ের অভাবে সেটি হয়নি। বিদেশী ক্রিকেটাররা আসছে বলে বিপিএল বিশ্বের কাছে আরো বেশি মর্যাদাপূর্ণ হচ্ছে। এখানে আমরা অনেক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই। তরুণরা বিদেশী অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের সাথে ড্রেসিং রুম ভাগ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং অনেক কিছু শেখার সুযোগ পায়।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top