মাশরাফিদের স্বপ্ন ভেঙে ফাইনালে সাকিবরা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করলো ঢাকা ডায়নামাইটস। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মাশরাফি মর্তুজার রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখলো তারা। আগামী শুক্রবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ফাইনালে লড়াই করবে সাকিব আল হাসানের দল। সন্ধ্যা ৭টায় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে তারা।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুরকে হারিয়েই প্রথম ফাইনালে পৌঁছে কুমিল্লা।

আজ সন্ধ্যায় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে রংপুর রাইডার্সকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ঢাকার ডায়নামাইটসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে উড়ন্ত সূচনা করেন রংপুরের ওয়েস্ট ইন্ডিজের মারকুটে ব্যাটসম্যান ক্রিস গেইল ও নাদিফ চৌধুরি। এবারের আসরে এই প্রথম খেলতে নামলেন তিনটি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলা নাদিফ।

ইংল্যান্ডের অ্যালেক্স হেলস চলে যাওয়ার পর থেকে ওপেনার নিয়ে বড় ভোগন্তিতে ছিল রংপুর। মেহেদি মারুফ নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে না পারায় আজ নাদিফকে সুযোগ দেয় রংপুর। সুযোগ পেয়েই জ্বলে উঠেন নাদিফ। দুটি চার ও তিনটি ছক্কায় নিজের ইনিংস শুরু করেন নাদিফ। অন্য প্রান্তে সর্তক থাকলেও, দুটি ছক্কায় ভালো কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন গেইল। কিন্তু তিন বলের ব্যবধানে দুর্দান্ত শুরুতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে থাকা রংপুরের আশা চুরমার হয়ে যায়।

চতুর্থ ওভারের শেষ বল, পঞ্চম ওভারের প্রথম ও দ্বিতীয় বলে তিনটি উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর। ১২ বলে ২৭ রান করা নাদিফকে ঢাকার স্পিনার শুভাগত হোম, ১৩ বলে ১৫ রান করা গেইল এবং দক্ষিণ আফ্রিকার রিলি রুশোকে শূন্য রানে শিকার করেন রুবেল। ফলে দলীয় ৪২ রানেই তিন উইকেট হারায় রংপুর। গেইল-নাদিফ চার ওভারে ৪২ রান যোগ করেছিলেন।

দুর্দান্ত শুরুর পরও হঠাৎ তিন বলের ঝড়ে খাদের কিনারায় পড়ে যাওয়া রংপুরকে খেলার ফেরানোর চেষ্টা করেন উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ মিথুন ও ইংল্যান্ডের রবি বোপারা। তাদের চেষ্টা সফল হয়। চতুর্থ উইকেটে ৬৪ রানের জুটি গড়েন তারা। এজন্য তারা ৫৪ বল মোকাবেলা করেন । মিথুন-বোপারায় জমে যাওয়া জুটিতে ভাঙ্গন ধরিয়ে ঢাকাকে দারুণ এক ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার কাজি অনিক। দুটি করে চার ও ছক্কায় ২৭ বলে ৩৮ রান করেন ফিরেন মিথুন।

মিথুনের বিদায়ের পর রংপুরের ব্যাটিং লাইন তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে। দলীয় ১০৬ রানে চতুর্থ উইকেট হিসাবে মিথুনের বিদায় নেয়ার পর সেখান থেকে ১২৮ রানে নবম উইকেট হারায় রংপুর। এসময় ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল ৩, অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা শূন্য, নাহিদুল ইসলাম ৪, ফরহাদ রেজা ২, শফিউল ইসলাম শূন্য রানে ফিরেন। রংপুরের সম্মানজনক স্কোর গড়ার আশাও শেষ হয়ে যায়।

তবে শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে একটি ছক্কা ও দুটি চারে রংপুরকে দেড় শ’ রানের কোটা পেরিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখান বোপারা। কিন্তু ওই ওভারের চতুর্থ বলে বোপারাকে থামিয়ে দেন এ ম্যাচে ঢাকার সফল বোলার রুবেল। ছয়টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৩ বলে ৪৯ রান করেন বোপারা।

ঢাকার রুবেল ২৩ রানে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন। এবারের আসরে এখন পর্যন্ত ১৪ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ শিকারে তৃতীয়স্থানে উঠে আসেন এই পেসার।

১৪৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ওপেনার উপল থারাঙ্গাকে হারালেও দ্রুত রান তুলতে থাকে ঢাকার ব্যাটসম্যানরা। সুনীল নারাইন আট বলে তিন বাউন্ডারিতে ১৪ রান তুলে নাজমুল ইসলামের বলে সাজঘরে ফিরেন।

এরপর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক সাকিব। দুই বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ২০ বলে ২৩ রান করেন তিনি।

তিনি ফিরলে রনির তালুকদারের সাথে জুটি বাঁধেন কাইরন পোলার্ড। দলকে এগিয়ে নিয়ে যান তারা। কিন্তু এক ওভারেই মাশরাফির শিকার হন পোলার্ড আর রান আউট হয়ে ফিরে যান রনি।

তবে তা দ্রুত ক্যারিবীয় হার্ডহিটার অ্যান্দ্রে রাসেল। নুরুল হাসানকে সঙ্গী করে ছক্কার ঝড় তুলে ২০ বল বাকি থাকতেই ঢাকাকে ফাইনালে পৌঁছে দেন। ১৯ বলে পাঁচটি ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন তিনি।

রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি দুটি উইকেট শিকার করেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top