1. kaium.hrd@gmail.com : ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক
মহান বিজয় দিবস আজ
শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৩৮ পূর্বাহ্ন

মহান বিজয় দিবস আজ

ময়মনসিংহ লাইভ কর্তৃক প্রকাশিত
  • আপডেট সময় : রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৮

আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪৭ বছর পূর্ণ হলো আজ। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের এ দিনে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা।
জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মধ্য দিয়ে স্মরণ করবে তাদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। স্মরণ করবে সেইসব বীর সেনানীকে যারা শোষণ-বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে অনাগত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিতে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যেসব নরনারীর সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্মান জানানো হবে।
যথাযোগ্য মর্যদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো : আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলার শোষিত বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বুটেরতলায় স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে গণহত্যায় নামে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি হঠকারী শাসকগোষ্ঠী। আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ পরিত্যাগ করে তারা বন্দুকের নল আর কামানের গোলা বেছে নেয় সমাধানের উপায় হিসেবে। অসম যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় আমাদের ওপর। নিরস্ত্র মানুষকে নির্বিচারে হত্যায় মেতে উঠল অস্ত্রের জোরে বলীয়ান সামরিক শাসক শ্রেণী। শুরু হলো মুক্তির লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ।
ব্রিটিশদের বিদায়ের পর নতুনরূপে এ জাতির ওপর শোষক হিসেবে আবির্ভূত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণী। যে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিরল ভূমিকা রেখেছিলেন সেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকেই আবার অস্ত্র ধরতে হলো পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক শ্রেণীর হঠকারিতা এবং অদূরদর্শিতার কারণে দুই অঞ্চলের মধ্যে তৈরি হয় ভেদ রেখা এবং বৈষম্যের বেড়াজাল। পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক শ্রেণীর শোষণ, বঞ্চনা আর অবহেলা চরম আকার ধারণ করলে প্রতিবাদে ক্রমে অগ্নিগর্ভ হতে থাকে এ অঞ্চল। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি কর্র্ণপাত না করে বুটেরতলায় তা পিষ্ট করার নীতি গ্রহণ করে তারা। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে তারা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভকারী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে টালবাহনা শুরু করে তারা।
ফলে ক্ষোভে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান । একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে প্রবল করে তোলে। ঢাকা যখন অগ্নিগর্ভ, তখন পাকিস্তানি শাসকচক্র আমাদের মুক্তির স্পৃহাকে দমনের পথ বেছে নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে জন্ম দিলো ২৫ মার্চের কালরাত। এরপরই চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের পৃথক পথচলার যাত্রা। ওদের সাথে আর নয়। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হলো চূড়ান্ত লড়াই। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তি সংগ্রামের পর পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের এ দিনে রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৯১ হাজার ৪৯৮ জন নিয়মিত অনিয়মিত এবং আধা সামরিক সৈন্য নিয়ে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেন সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে। শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পথচলা।
বিএনপির বাণী
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বাণীতে প্রবাসী বাংলাদেশীসহ দেশবাসী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলা হয়Ñ আজকের এ দিনে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি সেসব অকুতোভয় বীর শহীদদের কথা, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন মাতৃভূমি পেয়েছি। তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করি। পরাধীনতার হাত থেকে দেশের বিজয় অর্জনে যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেনÑ তাদের জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।
বাণীতে বলা হয়Ñ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে দেশের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ী হন। তাই ১৬ ডিসেম্বর আমাদের গর্বিত এবং মহিমান্বিত বিজয় দিবস। এ দেশের দামাল ছেলেরা হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার সূর্য। আজকের এ মহান দিনে সেসব বীর সেনাদের প্রতি সশ্রদ্ধ অভিবাদন। ১৯৭১ সালে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজো বিদ্যমান। আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করে আমাদের একটি পদানত জাতিতে পরিণত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। এ দেশে এখন নাগরিক স্বাধীনতা নেই। মানুষ এখন অধিকার হারা। গণতন্ত্রহীন দেশে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার দাপটে সর্বত্র হতাশা, ভয় আর নৈরাজ্যের অন্ধকার নেমে এসেছে। গণতন্ত্রের অবিসংবাদিত নেত্রীকে অন্যায়ভাবে বন্দী করা হয়েছে কারাগারে। বিজয় দিবসের চেতনা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করেছে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে। মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সবার প্রতি সেই আহ্বান জানাই।
জামায়াতের বাণী : ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ গতকাল এক বাণীতে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’। আমাদের জাতীয় জীবনে এ দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সমগ্র জাতির অবদানের কথা আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও দেশের জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের মাগফিরাতের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি।
তিনি বলেন, জাতি এমন এক সময় ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করতে যাচ্ছে যখন দেশে এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাধীনতার মূল অর্জন গণতন্ত্রকে হারিয়ে সমাজ আজ এক অনিশ্চিত গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেছে। দেশে বিরাজমান বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে দেশকে উদ্ধার করার একমাত্র পথ অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। তাই দেশবাসীর প্রত্যাশা বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতিত্ব বন্ধ করে সব দলের জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গ্রেফতার অভিযান এবং হামলা, মামলা ও সন্ত্রাস বন্ধ করবে। জনগণ যাতে অবাধে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারেন তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। অন্যথায় বিরাজমান সঙ্কট আরো ঘনীভূত হয়ে দেশে এক অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই বহন করতে হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষার সুদৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আলোচনা সভা ও দোয়ার মাহফিলসহ নানাবিধ অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে উদযাপন করার জন্য তিনি জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। সেই সাথে ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে তিনি দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও সবার সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।

নিউজটি শেয়ার করতে নিচের বাটনগুলোতে চাপ দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
Mymensingh-IT-Park-Advert
Advert-370
Advert mymensingh live
©MymensinghLive
প্রযুক্তি সহায়তা: ময়মনসিংহ আইটি পার্ক