মসজিদে হামলায় ‘একজনই জড়িত’ : নিউজিল্যান্ড পুলিশের ধারণা

ক্রাইস্টচার্চ শহরে শুক্রবার দুটি মসজিদে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একজনই জড়িত বলে ধারণা করছে নিউজিল্যান্ড পুলিশ। খবর বিবিসির।

পুলিশ বলছে, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারেন্ট (২৮) একাই দুই মসজিদে হামলা চালিয়েছে। আটক অন্য ব্যক্তিদের নির্দোষ বলে ধারণা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে আটক এক নারীকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, আটক অন্য ব্যক্তিরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে না বলেও জানান তিনি।

পুলিশ কমিশনার আরো বলেন, আটক এক তরুণের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরোধী মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণকে আগামীকাল সোমবার আদালতে নেয়া হবে। তাদের বিরুদ্ধে এর আগে কোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে এই হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ৫০ জন।

সর্বশেষ একজনের লাশ আল নুর মসজিদের মধ্যে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ।

এখনো আরো ৩৪ জন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে এক শিশুকে গুরুতর অবস্থায় অকল্যান্ডের শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এত বড় একটি ধ্বংসযজ্ঞের পর আহতদের চিকিৎসায় হাসপাতালের কর্মকর্তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রাইস্টচার্চ হাসপাতালের প্রধান সার্জন গ্রেগ রবার্টসন।

এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান সার্জন বলেন, ‘আমরা সবাই নিজের মতো করেই এ ব্যাপারটার সঙ্গে লড়ছি। এ ধরনের পরিবেশ আমাদের এখানে কখনোই প্রত্যাশিত ছিল না। গুলিতে আহত মানুষ আমরা দেখেছি, কিন্তু একদিনে ৫০ জন গুলিবিদ্ধ মানুষ আমরা কখনো দেখিনি।’

গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময় কালো কাপড় ও হেলমেট পরা এক বন্দুকধারী ক্রাইস্টচার্চ শহরে হ্যাগিল পার্ক এলাকায় আল নুর মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করে। নিহতদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি রয়েছেন। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরো এক বাংলাদেশি।

এ ঘটনায় অনলাইনে সরাসরি হামলার ভিডিওচিত্র সম্প্রচারকারী ব্রেন্টন ট্যারান্টের মাথায় ক্যামেরা লাগানো ছিল। ব্রেন্টন জন্মসূত্রে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সে দেশটির উত্তরাঞ্চলের গ্রাফটন শহরের বাসিন্দা। হামলার আগে অনলাইনে পোস্ট করা ৭৩ পৃষ্ঠার এক ইশতেহারে সে হামলার কারণ বর্ণনা করেছে।

সেখানে ব্রেন্টন নিজেকে একজন সাধারণ শ্বেতাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেয়। মূলত শ্বেতাঙ্গদের ভূখণ্ড কখনোই অনুপ্রবেশকারীদের হবে না, এটা বুঝিয়ে দিতেই ওই হামলা চালানো হয় বলে ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ব্রেন্টনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আদালত ব্রেন্টন ট্যারান্টের জামিনবিহীন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ ব্রেন্টনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। ওই দিন তাকে সাউথ আইল্যান্ড সিটি হাইকোর্টে তোলা হবে।

এদিকে পুলিশের সরবরাহ করা এক ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ব্রেন্টন ট্যারান্টকে সাদা রঙের কয়েদিদের শার্ট এবং হাতকড়া পরা অবস্থায় আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top