‘মনে হয়েছে জাহান্নামের দরজায় দাড়িয়ে আছি’

১০ বছর আগের সেই দিনটি বিভীষিকাময় ছিলো অস্ট্রেলীয়বাসীর, বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া প্রদেশের বাসিন্দাদের জন্য। ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে যেদিন নিহত হয়েছে ১৭৩ জন। দিনটিকে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেই দিনটিকে। দিনটি ছিলো শনিবার, যে কারণে সেটি আজো ব্ল্যাক স্যাটারডে হিসেবে খ্যাত।

২০০৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি, আর একটি সাধারণ দিনের মতোই দিন শুরু করেছিলেন টনি থমাস। জানুয়ারির শেষ ও ফেব্রুয়ারির শুরুর সময়টাতে অস্ট্রেলিয়াতে সাধারণ রেকর্ড তাপমাত্রা থাকে। প্রচণ্ড গরম পড়ে এই সময়। যে কারণে দাবানল সৃষ্টি হয়। সেই দিনটির কথা স্মরণ করে থমাস বলেন, ‘আগুন হয় মনে হচ্ছিল যেন জাহান্নামের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছি আমরা। ওই পরিস্থিতি ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।

স্ত্রীকে মেলবোর্নের উত্তর-পূর্ব দিকে মার্সিভিলে থাকেন থমাস। জন্মদিন উপলক্ষে এক আত্মীয় বেড়াতে এসেছিলেন সেদিন। ভালোই কাটছিলো দিনটি; কিন্তু সন্ধ্যায় হঠাৎ করে পশ্চিম দিকে ধোয়া দেখতে পান তারা, এরপর আগুন। ক্রমশ যা কাছে আসতে থাকে। ধোয়ায় ছেড়ে যায় তাদের বাড়ি। এক কর্মচারী ও বেড়াতে আসা আত্মীয় ধোয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় বিপদ বুঝতে পেরে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ছুটতে শুরু করেন তারা ।

এক পর্যায়ে একটি জোড়ালো বাতাসে আগুন তাদের কাছে চলে আসে। থমাস বলেন, ২০-৩০ মিটার লম্বা গাছেগুলোর জ্বলছে উপরে আগুনের কুন্ডলি উঠছে মনে হলো যে বিরাট আকারের একটি বল।

অল্প সময়ের বাবধানে সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভিক্টোরিয়ার বিস্তৃর্ণ বনাঞ্চলে। বনের আশপাশের বাড়ি-ঘর, খামারসহ অনেক স্থাপনা ছাই হয়ে যায় আগুনে। রাস্তায় রাখা অনেক গাড়িও পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। মার্সিভিলে মারা যায় ৩৯ জন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলে কিংলেক শহর ও আশপাশের এলাকা। সেখানে মারা যায় ১২০ জন। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জ্বলেছে বনাঞ্চল। তবে ৭ ফেব্রুয়ারি ছিলো ভয়াবহতম দিন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top