বছরের ব্যবধানে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের কর্মী লাশ হলো অনিরাপদ সড়কে

গত বছর রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। সেই আন্দোলনে সক্রিয় থেকে নিরাপদ সড়কের দাবি জানিয়েছিল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে রাজধানীর নর্দ্দায় সড়কেই বাসচাপায় নিভে গেছে এই তরুণের প্রাণপ্রদীপ।
আবরারের বন্ধু ও পরিচিতজনদের প্রশ্ন, যে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আবরার আন্দোলন করেছে, কথা বলেছে, সেই সড়কেই তার প্রাণ গেলো। তাহলে সড়ক কতটুকু নিরাপদ হয়েছে?
মঙ্গলবার ক্লাসে যাওয়ার উদ্দেশে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে নর্দ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বিইউপি’র বাসে উঠতে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস তাকে চাপা দেয়। তিনি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের শিক্ষার্থী ও আবরারের বন্ধু নাজমুস সাকিব বলেন, আবরারও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। সবার জন্য সে নিরাপদ সড়ক চেয়েছিল। কিন্তু দিনের শেষে কী পেলাম? আমার বন্ধু আজ সড়কেই মারা গেলো।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত বছরের ২৯ জুলাই আন্দোলন শুরু হয়। রাস্তায় নেমে আসে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ, একপর্যায়ে যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ শুরু করে তারা। এ সময় মিছিল করতে গিয়ে ৫ আগস্ট রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় হেলমেট বাহিনী’র হামলার শিকার হতে হয়েছিল আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
ওই আন্দোলন চলাকালে ২ আগস্ট আবরার তার ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের ছবি প্রকাশ করেন। যার নিচে লিখা ছিল ‘নিরাপদ সড়ক চাই’।
আবরারের সহপাঠী আব্দুল কাদির খান বলেন, আমরা যে দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম, রাস্তায় নেমেছিলাম, সে দাবি কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়েছে? সড়ক নিরাপদ করার যে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, তা যে বাস্তবায়ন করা হয়নি, আবরারের মৃত্যুই তার বড় প্রমাণ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top