প্রধানমন্ত্রীর দফতরে মিথ্যা অভিযোগ , গণধোলাইয়ের শিকার রফিক মিয়া

প্রধানমন্ত্রীর দফতরে মিথ্যা অভিযোগ করে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন কিশোরগঞ্জের রফিক মিয়া। মঙ্গলবার বিকেলে জেলার কটিয়াদী উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কটিয়াদী বাসস্ট্যাণ্ডে সড়ক ও জনপথের রেকর্ডকৃত জায়গায় বঙ্গবন্ধুর মোরাল তৈরি, ড্রেন খনন, সৌন্দর্যবর্ধন ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজ করতে গেলে সরকারি নির্মাণ কাজে বাধা দেন স্থানীয় রফিক মিয়া। জায়গাটির পশ্চিমাংশের ১০ শতাংশ জায়গা নিজের বলে দাবী করেন তিনি। পরদিন রাতের আঁধারে জায়গাটিতে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেন।

এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা: আকতারুন নেছা, উপজেলা চেয়ারম্যান মুশতাকুর রহমান, পৌর মেয়র শওকত উসমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এ জলিল ঘটনাস্থলে গিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।

স্থাপনা সরানোর নির্দেশের পর রফিক কটিয়াদী বাসস্ট্যাণ্ডের মাংস ও মুরগী ব্যবসায়ী আরিফ, সেলিম ও কালামের কাছ থেকে ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান এক লক্ষ টাকার নগদ ঘুষ গ্রহণ করেছেন এবং প্রতি দোকান থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে ঘুষ দাবি করেছেন বলে মিথ্যা অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। অভিযোগের ১৭টি অনুলিপি বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠান তিনি।

অভিযোগের অনুলিপি ডাকযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হাতে আসলে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পৌর মেয়র, মডেল থানার ওসি সাংবাদিকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। মাংস ব্যবসায়ী আরিফ, সেলিম, কালামকে জিজ্ঞাবাবাদ করেন তারা। কিন্তু ঘুষের বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না বলে জানান।

এ সময় সেখানে রফিক উপস্থিত হন। তার সাথে থাকা ব্যাগে তল্লাশি করলে অভিযোগের অনুলিপি পাওয়া যায়। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি মিথ্যা অভিযোগের কথা স্বীকার করেন। এ সময় উত্তেজিত ব্যবসায়ীরা তাকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপার্দ করে।

এ ঘটনার পর সরকারি নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান ও ঘুষ গ্রহণের মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রধান সহকারী (সিএ) বাদী হয়ে কটিয়াদী মডেল থানায় রফিক মিয়া, কুদ্দুছ মিয়া ও সোহরাফ উদ্দিনসহ অজ্ঞাত ১৫/২০ জনকে আসামি করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. আকতারুন নেছা জানান, ‘সড়ক ও জনপথের রেকর্ডকৃত জায়গায় বঙ্গবন্ধুর মোরাল নির্মাণ ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করতে গেলে রফিক মিয়া ও তার সহযোগিরা বাধা প্রদান করে। এক সপ্তাহের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা তুলে নেয়ার নির্দেশ দিলে রফিক মিয়া মাংস ও মুরগি ব্যবসায়ীর নাম ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ করে। মঙ্গলবার বিকালে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে গেলে রফিক ও তার গংরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় সিএ আব্দুর রহমান বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ রফিক মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।’

Share this post

scroll to top