পুলিশ রেখাকে শিরিন বেগম বানিয়ে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায়

মূল আসামি শিরিন বেগমের পরিবর্তে সাজা খাটা সেই রেখা খাতুনকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রেখা খাতুনকে মুক্তি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বৃহস্পতিবারই রেখাকে মুক্তির নির্দেশ দেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ।

গত ২০ মার্চ রেখাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। রেখা ঝিনাইদহ শহরের শহীদ মশিউর রহমান সড়কের বাসিন্দা লাল্টু শেখের মেয়ে ও যশোর শহরের ডালমিল এলাকার ভাড়াটিয়া।

সূত্র জানায়, রেখা খাতুন শহরের চাঁচড়া ইসমাইল কলোনির শহিদুল ইসলামের সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী। শহিদুলের বর্তমান স্ত্রী মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত শিরিন বেগম বিদেশে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। সেই পরোয়ানা তামিল করতে গিয়ে পুলিশ রেখাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়ে গত ৩১ মার্চ জাতীয় একটি দৈনিকের শেষের পাতায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

আদালত সূত্র জানায়, গত ২০ মার্চ কোতোয়ালি থানা পুলিশ শহরের রায়পাড়া এলাকা থেকে রেখা খাতুনকে শিরিনা বেগম হিসেবে গ্রেফতার করে। ওই দিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

২০০৫ সালের একটি মাদক মামলায় ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট (হেরোইন উদ্ধার) যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া ইসমাইল কলোনি এলাকার শহিদুল ইসলামের স্ত্রী শিরিন বেগমকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ অনাদায়ে আরও ৪ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালত।

এই মামলায় শিরিন বেগমের স্বামী শহিদুল ইসলাম খালাস পান। শিরিন বেগম পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

গত ২০ মার্চ শহিদুল ইসলামের সাবেক দ্বিতীয় স্ত্রী রেখা খাতুনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত রেখা খাতুন শিরিন বেগম নয় দাবি করে ২৪ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে আবেদন করেন রেখার আইনজীবী আব্দুস সহিদ।

বিচারক শুনানি শেষে বিষয়টি পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার আদেশ দেন। পুলিশ সুপারের পক্ষে তদন্ত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী।

বৃহস্পতিবার যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম) আদালতের বিচারক নাজির আহমেদ পুলিশের প্রতিবেদন আমলে নিয়ে রেখা খাতুনকে মুক্তির আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেখা খাতুনের আইনজীবী আবদুস সহিদ।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী বলেন, রেখা খাতুনকে ভুলক্রমে শিরিন বেগম হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। রেখা এবং শিরিন আলাদা ব্যক্তি। শিরিন বিদেশে রয়েছেন। রেখা শহিদুলের সাবেক স্ত্রী। এলাকাবাসী পুলিশকে বলেছিল, সেই (রেখা) শিরিন। পুলিশের অনিচ্ছাকৃত ভুল এটি। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু তালেব বলেন, আদালতের নির্দেশে সন্ধ্যায় শিরিন বেগমকে (রেখা খাতুন) মুক্তি দেয়া হয়েছে। একজনের পরিবর্তে আরেকজন ছিল কিনা, সেটা আমরা বলতে পারব না। যেভাবে, যাকে পাঠানো হয়েছিল, তাকেই আদালতের আদেশে মুক্তি দেয়া হয়েছে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top