ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ভারতীয় বিমানসংস্থা

দেনার দায়ে জর্জরিত ভারতীয় বিমানসংস্থা জেট এয়ারওয়েজের পাইলটরা এবার তাদের বকেয়া বেতন নিয়ে কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী সুরেশ প্রভুকে। জেট এয়ারওয়েজের ভারতীয় পাইলটদের ট্রেড ইউনিয়ন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটরস গিল্ড বা ন্যাগ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “এই বিমানসংস্থাটি এখন ধ্বংসের কিনারায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে আমাদের। তাতে আরো ভীত হয়ে পড়ছি আমরা। এর ফলে কয়েক হাজার কর্মচারী বেকার হয়ে পড়বেন রাতারাতি। এর ফলে ভারতীয় বিমানশিল্পের চরিত্রটাই বদলে যাবে। কারণ, এত বিমান বন্ধ হয়ে হয়ে গেলে চাহিদার থেকে যোগান কম হয়ে যাওয়ায় টিকিটের দাম বেড়ে যাবে কয়েকগুণ। বিপাকে পড়বেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ”।

ন্যাশনাল গিল্ড অ্যাভিয়েটরসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলার সময় পাইলট আর ইঞ্জিনিয়াররা ছাড়া সমস্ত কর্মচারীকেই সময়মতো বেতন দিয়ে দিয়েছিল জেট এয়ারওয়েজ।

জেট এয়ারওয়েজকে বাঁচানোর নির্দেশ
দেউলিয়া যাতে না হয়ে পড়ে জেট এয়ারওয়েজ, তার দিকে লক্ষ রাখার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ঋণ হয়ে গিয়েছে জেট এয়ারওয়েজের। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। কোনোভাবেই যাতে এই সময় কয়েক হাজার মানুষের চাকরি যাতে চলে যায়, তা নিশ্চিত করতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । জেট এয়ারওয়েজের দুই কর্মকর্তা এই কথা জানান সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে।

স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার নেতৃত্বাধীন ব্যাঙ্কগুলোর কাছ থেকে গত বছর পর্যন্ত জেট এয়ারওয়েজের সম্পর্কে নিয়মিত তথ্য নিত কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়। শেষ কয়েকটি মাসে সংস্থাটির পুনর্জীবন পরিকল্পনার জন্য প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহেই তথ্য নিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলো। “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্তারা এই ব্যাপারে নিয়মিত তথ্য নিয়ে চলেছেন”, জানান জেট এয়ারওয়েজের ওই কর্তা।

জেট এয়ারওয়েজ আরো বেশি সংখ্যায় বিমান বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তার ফলে বিমান পরিবহণ সংক্রান্ত সমস্যা আরো জটিল আকার ধারন করেছে। তেলের দাম বাড়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেট এয়ারওয়েজ। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছেন অসামরিক পরিবহণ মন্ত্রী সুরেশ প্রভু । মন্ত্রণালয়ের সচিবকে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এর আগে জেটের বিমান দেখভালের দায়িত্ব পালন করা ইঞ্জিনিয়াররা কেন্দ্রকে চিঠি লিখে জানান, তাদের তিন মাসের বেশি সময় বেতন হয়নি। এমতাবস্থায় যাত্রী সুরক্ষা চিন্তার বিষয় হয়ে উঠছে। জেটের সমস্যা এবং দাবি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করছেন অসামরিক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিনহা।

বাজারে জেটের দেনার পরিমাণ এক বিলিয়নেরও বেশি। আর তার ফলে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। কর্মীদের বেতন থেকে শুরু করে অন্য খরচ করতে পারছে না জেট।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top