‘ঝেঁটিয়ে বিদায়ের করার চেয়ে অবসর নেয়া অনেক ভালো’

ঝেঁটিয়ে বিদায় হয়ে যাওয়ার থেকে নিজে থেকে অবসর নেয়া অনেক ভালো বলে মন্তব্য করেছেন সদ্য বিদায়ী অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে অর্থমন্ত্রী এবং অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর বিদায়ী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সদ্য সাবেক অর্থমন্ত্রী এম এ মুহিত সকালেই বিদায় নেয়ার জন্য তার মন্ত্রণালয় চলে আসেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি তার অফিস কক্ষে অর্থমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেন। অনেকে তাকে ফুলের তোড়া উপহার দেন। এ সময় তাকে কখনো বেদনা-বিধুর আর কখনো হাস্যজ্জ্বল দেখা গেছে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২৫ জানুয়ারি আমার বয়স ৮৫ বছর পূর্ণ হবে। এ বয়সে আল্লাহ আমাকে এমন রেখেছেন, যে আমি একটি জটিল দেশে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মতো জটিল দায়িত্ব পালন করেছি। এখন তো আমার অবসর নেয়ার দরকারই। অবসর না নিয়ে ঝেঁটিয়ে বিদায় হয়ে যাওয়ার থেকে অবসর নেয়া অনেক ভালো। এদিক থেকে আমি খুব সৌভাগ্য যে, আমাকে কেউ বিদায় করেনি আমি নিজে থেকেই বিদায় নিয়েছি। এ জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’

মুহিত বলেন, ‘আমাকে অনেকেই বলেন অবসরে কী করবো? বাংলাদেশে করার কোনো ক্ষেত্রের অভাব নেই। আমার সংগ্রহে ৫০ হাজার বই আছে। এগুলোর সব পড়া হয়নি। এগুলো পড়ব। আমি ৩৪টি বই লিখেছি। আরও বই লিখব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গত ১০ বছরে বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ থেকে উত্তোরণ ঘটিয়েছি। বিশ্বের কোনো দেশ বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশ বলতে সাহস পায় না। দেশকে এ অবস্থায় উন্নয়নে আমার অংশগ্রহণ থাকায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমরা আগামী ৫ বছর ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বার ক্ষমতায় থাকছি। আগামী ৫ বছরে দেশে এমন একটি জায়গায় যাবে, যাকে কেউ রোধ করতে পারবে না।’

বিদায়ী অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান (বর্তমানে পরিকল্পনামন্ত্রী) বলেন, ‘আমি সকলের সহযোগিতায় এতদিন দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতেও দায়িত্ব পালন করার জন্য সকলের সহযোগিতা চাই।’

অনুষ্ঠানে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মহাহিসাব নিরীক্ষক মুসলিম চৌধুরী বলেন, ‘ভালো মানুষ গড়ার কারিগর হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। রাজনীতি এ ধরনের লোকের বড় প্রয়োজন। স্যার (মুহিত) আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমি মনে করি তার জায়গা পূরণ করাটা কঠিন হবে।’

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী আমাদের জন্য বাতিঘর। বাতিঘর যেমন তার কাছে না গেলেও মানুষকে আলো দেয়। তেমন তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও দূর থেকে আমাদের দিক নির্দেশনা দেবেন।’

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top