চৌগাছায় পাট চাষীদের বিঘা প্রতি লোকসান ৮ হাজার টাকা

যশোরের চৌগাছায় পাটের দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। বিঘা প্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৯৭/৯৮, জে আর ও ৫২৪ এবং তোষা জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। পাটের দাম ভাল পাওয়ার আশায় ১শ হেক্টর বেশী জমিতে পাট চাষ করেন কৃষকরা। উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট উঠা শুরু হয়েছে।

আবার এ বছর কাঁচা সবজির দাম ভালো থাকায় অনেকে পাট কেটে সবজি চাষ করেছেন। নতুন পাট উঠার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে পাটের দাম মণ প্রতি হাজার টাকা কমে গেছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম ১৮’শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। মৌসুমের শেষের দিকে ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার হলেও বর্তমানে পাটের দাম মণ প্রতি ১২শ-১৩শ টাকা। আর এর কারণে প্রতি বছর লাভবান হচ্ছে আড়ৎ ব্যবসায়ীরা। পাটের দাম কমার কারণে কৃষকদের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে।

উপজেলার লস্করপুর গ্রামের পাটচাষী আয়তাল হক জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে জমি লিজ, চাষ, বীজ, সার, সেচ, নিড়ানী, কাটা, জাগ দেয়া, ধুয়া ইত্যাদি বাবদ খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ১ বিঘা জমিতে পাটের ফলন হয় ৯ থেকে ১০ মণ। ১০ মণ পাটের বাজার মূল্য ১৩ হাজার টাকা। ১ বিঘার পাট খড়ি ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও মোট মূল্য হয় ১৬ হাজার টাকা। ফলে ১বিঘা পাটে লোকসান গুণতে হচ্ছে ৮ হাজার টাকা।

উপজেলার পুড়াপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী শাহিনুর রহমান জানান, উপজেলার চৌগাছা, সলুয়া, পুড়াপাড়া, হাকিমপুর, সিংহঝুলীসহ বিভিন্ন বাজারে পাট আমদানী হচ্ছে। এক শ্রেণীর অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী কম দামে ভালো পাট কিনে গুদামজাত করছেন। বাজারে পাটের আমদানী ভাল হলেও বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ পাটের দাম চড়া থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা নতুন করে (সোনালিআঁশ) পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন।

পাট চাষী আনিচুর রহমান জানান, পাট কাটার মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টির ফলে কৃষকেরা পাট জাগ দিতে দারুণ ভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ বছর অপরিষ্কার পানিতে পাট পচায় পাটের রং কালো হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম থেকে আসা বেশিরভাগ পাটেরই রং কালো। চৌগাছা বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর বদ্ধ ও পঁচা পানিতে পাট জাগ ও মাটি চাপা দেয়ার কারণে পাটে সোনালী রং আসনি। পাটের দাম কমে যাওয়ার কারণে লাভ তো দূরে থাক ধার-দেনাই পরিশোধ হচ্ছে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন জানান, এ বছর পাটের উপাদন খরচ বেশী হয়েছে। প্রায় ৯০ ভাগ পাট কাটা শেষ হয়েছে। তবে পাটের দাম গত বছরের চাইতে এ বছর অনেক কম।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top