খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে বাধা দেয়া হচ্ছে : রিজভী

প্রায় তিন সপ্তাহ অতিক্রান্ত হলেও বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার নিকট আত্মীয়দের দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করে বলেন, বন্দীদের যে আইনসম্মত অধিকার তা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে বেগম জিয়াকে। এই নিষ্ঠুর আচরণ কিসের ইঙ্গিত? বিশাল লাল দেয়ালের মধ্যে রুদ্ধকপাট মুক্তিহীন বেগম জিয়াকে অন্তরীণ রেখে বাইরের দুনিয়া থেকেও সম্পূর্ণরুপে বিচ্ছিন্ন করার পাঁয়তারা চলছে।

আজ সোমবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, পৃথিবীর কোনো নিষ্ঠুর স্বৈরতান্ত্রিক দেশেও বন্দীদের সাথে এরূপ দূর্ব্যবহার করা হয় না, যা করা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম জিয়ার ওপর। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব, আত্মীয়স্বজন ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাক্ষাতের জন্য বারবার আবেদন করার পরও কারাকর্তৃপক্ষ তাতে কোনো কর্ণপাতই করেনি। কারাবিধি অনুযায়ী ৭ দিন পরপর বন্দীদের সাথে সাক্ষাতের নিয়ম। অথচ বেগম জিয়ার ক্ষেত্রে এই বিধান করা হলো ১৫ দিন পরপর। এখন সেই ১৫ দিনের বিধানকেও সরকারের নির্দেশে কারাকর্তৃপক্ষ অগ্রাহ্য করছে। বেগম জিয়ার ওপর এই মানসিক নির্যাতনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নানাভাবে পর্যুদস্ত করার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনারাই অংশ। বেগম জিয়ার সাথে তার নিকটাত্মীয়দের দেখা করতে না দেয়াটা রীতিমতো কঠিন মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে শুধু তার আত্মীয়স্বজনরাই নয়, দেশবাসী উদ্বেগাকুল ও উৎকন্ঠিত। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার আত্মীয়স্বজনদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

তিনি বলেন, নির্বাচন পূর্বাপর ব্যাপক সহিংসতা, রক্তপাত, ধানের শীষের প্রার্থীদের ওপর গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করা, ধানের শীষের নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করাসহ ধানের শীষের প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদেরকে পাইকারী হারে গ্রেফতার, প্রার্থিতা বাতিলসহ ভোটের নামে নিষ্ঠুর তামাশায় শুধু দেশবাসীই নয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও ক্ষুদ্ধ ও প্রতিবাদে সোচ্চার।

তিনি বলেন, তবে সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই- জনগণের অধিকারের পক্ষে আমাদের উচ্চারণ থামবে না। জনগণের ওপর জবরদস্তি করে ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাবেই। এদেশের ইতিহাস বিদেশী প্রভু ও স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে রক্তঝরা সংগ্রামের ইতিহাস।

তিনি বলেন, গত শনিবার মিথ্যে মামলায় হাজিরা দিতে গেলে কক্সবাজার নিম্ন আদালত কুতুবদিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল আহমদসহ ১৪ জনের জামিন নামমঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমি এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানেয়াট মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছকে প্রধান আসামী করে ১২০০ জনের বিরুদ্ধে আবারো ৪টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তাদের বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান রিজভী।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top