কৃত্রিম চিনিয়ে ভয়াবহ বিপদ!

বাড়তি ওজন বা মাত্রাতিরিক্ত মেদ যাতে কাবু করতে না পারে, সে জন্য চিনি থেকে ১০০ হাত দূরে থাকেন। তা বেশ। কিন্তু চিনির পরিবর্তে কী খান? সুগার ফ্রি? কেউ আবার চিনি এড়াতে শরণ নিয়ে থাকেন কৃত্রিম চিনির। ভাবছেন, এ ভাবেই চিনি এড়িয়ে রক্তে শর্করা বা শরীরে মেদ রুখতে পারছেন খুব? তা হলে এ বার সাবধান হোন।

কৃত্রিম চিনিতে ওজন তো কমেই না, উল্টা এতে ব্যবহৃত উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রাও খুব একটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সম্প্রতি কৃত্রিম চিনির উপর করা এক গবেষণায় এমন তথ্যই প্রকাশ করল বিএমজে মেডিক্যাল জার্নাল। বিশ্বব্যাপী বহুল প্রচারিত এই জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার রিপোর্টে উঠে এল কৃত্রিম চিনির ভয়াবহতা। কৃত্রিম চিনি নিয়ে সারা বিশ্বে চলা ৫৬টি গবেষণার উপর ভিত্তি করে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

সাধারণত, রান্নাবান্না থেকে চা-কফির আমেজ, ডায়াবিটিকদের ভরসা কৃত্রিম চিনি। অনেক স্বাস্থ্যসচেতন মানুষও চিনি এড়াতে ভরসা করেন কৃত্রিম চিনির বড়িকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি অ্যাসপার্টেম কৃত্রিম চিনির অন্যতম উপাদান।

যেকোনো প্রক্রিয়াজাত খাবার, জাঙ্ক ফুড, ডায়েট পানীয়তেও এই অ্যাসপার্টেমের উপস্থিতি থাকে। এতে তৈরি হওয়া শর্করা সহজে গলে গেলেও কৃত্রিম চিনিতে অ্যাসপার্টেমের পরিমাণ এতটাই বেশি থাকে যে, তা খুব একটা উপকার সাধন করতে পারে না। বরং এসব উপাদান অতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করলে হানা দিতে পারে কিডনির অসুখ, ক্যানসারের মতো মারণরোগও।

মাথা যন্ত্রণা, কিডনির উপর প্রভাব, হতাশা, খিদে বেড়ে যাওয়ার মতো নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে কৃত্রিম চিনিতে।

শুধু অ্যাসপার্টেমই নয়, কৃত্রিম চিনির বড়িতে থাকে স্যাকারিনও। যা ইনসুলিন নিঃসরণ ঘটায় ও প্রয়োজনের বেশি খিদে ডেকে আনে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকার বদলে ওজন বাড়ে। এর আর এক উপাদান সুক্রোজ। যা চিনির তুলনায় প্রায় ৫০০ গুণ বেশি মিষ্টি উপাদান দিয়ে তৈরি। সুতরাং ওজন কমানোর পরিবর্তে কৃত্রিম চিনি ওজন বাড়ায়। এ ছাড়াও মাথা যন্ত্রণা, কিডনির উপর প্রভাব, হতাশা, খিদে বেড়ে যাওয়ার মতো নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে এ সবের।

এই প্রসঙ্গে এক হরমোন বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী পুরুষদের দিনে ৯ চামচ ও মহিলাদের ৬ চামচের বেশি চিনি খাওয়া উচিত নয়৷ কিন্তু আধুনিক জীবনে চিনিতে যত তাড়াতাড়ি বিদায় জানাতে পারবেন, ততই শরীরের পক্ষে ভালো, তা বলে তার বদলে কখনোই কৃত্রিম চিনির আশ্রয় নেবেন না। তাতে আরো বেশিই ক্ষতি।’’

তা হলে উপায়?

চিনির বদলে গুড়ের বাতাসা, গুড় বা নারকেলজাত চিনি ব্যবহার করা যেতে পারে। এ সব তুলনায় অনেক স্বাস্থ্যকর। কৃত্রিম চিনি এড়িয়ে সুস্থ থাকতে আজ থেকেই বদলে ফেলুন অভ্যাস।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top