কংগ্রেসের ভেঙে যাওয়া চেয়েছিলেন গান্ধি : মোদির দাবি

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়ে গেছে। সব দল কোমর বেঁধে নেমে পড়ছে নির্বাচনী প্রচারণায়। মঙ্গলবার মোদির এলাকা গুজরাটে সভা করছে কংগ্রেস। তাতে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধির। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অন্য রকম বিস্ফোরণের জন্য এ দিনটিকেই বেছে নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ব্লগে মোদি মহাত্মা গান্ধিকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে কড়া আক্রমণ করে বসেন। গান্ধির ইতিহাসপ্রসিদ্ধ ড্যান্ডি অভিযানকে স্মরণ করে মঙ্গলবার ব্লগে একটি পোস্ট লিখেন তিনি। তাতে বলা হয়, গান্ধির দেখানো পথের উল্টো দিকে চলাই কংগ্রেসের কাজ। লেখার একেবারে শুরুর দিকে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, ড্যান্ডি অভিযান কীভাবে হবে তার শুরু থেকে শেষ জানতেন বল্লভভাই। কংগ্রেসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা ছিলেন দেশের প্রথম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মোদী বলেন, একাধিক লেখায় মহাত্মা গান্ধি বলেছেন, তিনি বৈষম্যের বিপক্ষে, সাম্যের পক্ষে। কিন্তু কংগ্রেস সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে দ্বিধা করেনি। দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জাতি দাঙ্গা বা দলিতদের উপর সর্বাধিক আক্রমণ নেমে এসেছে কংগ্রেসের শাসনামলেই। এছাড়া আরো কয়েকটি বিষয় তুলে ধরে মোদি দাবি করেন, গান্ধির দেখানো পথ আর কংগ্রেসের সংস্কৃতি এক নয়। আর তাই গান্ধি চেয়েছিলেন কংগ্রেস ভেঙে যাক। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গান্ধিজির এ মনোভাব আরো স্পষ্ট হয়েছিল।

ব্লগে মোদি লিখেন, মহাত্মা গান্ধি একবার বলেছিলেন, অপশাসন ও দুর্নীতি একসঙ্গে চলে। বিষয়টি উল্লেখ করে মোদী লেখেন, আমাদের সরকার দুর্নীতিকে খতম করতে সব রকমের উদ্যোগ নিয়েছে। পুরো ভারত জানে কংগ্রেস ও দুর্নীতি সমার্থক। টেলিকম থেকে সেচ, খেলা থেকে শুরু করে সংস্কৃতি বা শহুরে উন্নয়ন- সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতি করেছে কংগ্রেস।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, গরিবের টাকায় কংগ্রেস নেতারা নিজেদের ব্যাংক আকাউন্টের স্বাস্থ্য ভাল করেছেন। কিন্তু গরিব মানুষ নিজেদের সামান্য চাহিদাটুকু মেটাতে পারেনি। এর পাশাপাশি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি করার অভিযোগ আনেন তিনি।

গণতন্ত্র প্রসঙ্গে মোদী বলেন, গান্ধি গণতন্ত্রের কঠোর সমর্থক ছিলেন। আমি মনে করি গণতন্ত্র সুস্থ সমাজের চালিকা শক্তি। কিন্তু ১৯৭৫ সালে কংগ্রেস সেই গণতন্ত্রকে বিনষ্ট করার কাজ করেছে। তিনি আরো বলেন, আমার মনে হয় কংগ্রেসের অনেকে শুধু রাজনৈতিক কারণে স্বরাজ চেয়েছিলেন।

এদিকে মঙ্গলবার গুজরাটের আহমেদাবাদে অনুষ্ঠিত হচ্ছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। দলের নির্বাচনী কৌশল কী হবে, মূলত সেটা নিয়েই এ বৈঠক বলে জানা গিয়েছে। গত রোববার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

কংগ্রেস সূত্র জানায়, মহাত্মা গান্ধি ও সর্দার বল্লভ ভাই পটেলের জন্মস্থান এ গুজরাট থেকেই জাতির উদ্দেশে কড়া রাজনৈতিক বার্তা দিতে পারে দলটি। অনেক আগেই এ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামা হামলার পর তা স্থগিত করে দেয়া হয়েছিল। কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধি, ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধিসহ কংগ্রেসের প্রায় সব দলনেতাই এ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন।

সূত্র : এনডিটিভি, ইকোনমিক টাইমস

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top