ওদের উদ্দেশ্য ছিল আমাকে একদম মেরে ফেলা : আফরোজা আব্বাস

প্রচারণার সময়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা-৯ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস। গতকাল বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি বাসাবো চৌরাস্তায় গণসংযোগ করার জন্য গাড়ি থেকে নেমেই দূর থেকে দেখলাম, ওরা নৌকার সেøাগান দিতে দিতে হাত উুঁচ করে এলো, ওদের হাতে শুধু লাঠি আর হকিস্টিক। আমি সিনেমায় দেখেছিলাম ভাই- কিছু হলে লাঠিয়াল বাহিনী আসে। এই প্রথম বাস্তবে দেখলাম লাঠিয়াল বাহিনী। ওদের উদ্দেশ ছিল আমাকে একদম মেরে ফেলা। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই আক্রমণ ওরা চালায়। আমি গাড়ি থেকে বের না হলে ওরা আমাকে মেরে ফেলত। আমার গায়ে হাত দিলো, আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো। আমার ড্রাইভারকে ত-বিত করেছে, ছুরি দিয়ে রক্তাক্ত করেছে। আমার গাড়ির দরজা ভেঙে ফেলেছে, গাড়ির কোনো গ্লাস নেই। শাহজাহানপুরে ঢাকা-৮ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বাসায় এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

সাংবাদিক ও দলের নেতাকর্মীসহ নিরীহ পথচারীদেরও সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছে জানিয়ে আফরোজা আব্বাস বলেন, সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের মেরেছে এবং তাদের ক্যামেরা ভেঙে ফেলেছে, মহিলা দলের কর্মীদের চুল ধরে বেধড়ক মেরেছে এবং আমার সাথে থাকা আত্মীয়স্বজনদেরও মেরেছে। ওরা চাচ্ছে, আমারা ফিরে যাই, প্রচারণা বন্ধ করি। কিন্তু আমি ফিরে যাবো না। একা হলেও এগিয়ে যাবো, শেষ পর্যন্ত লড়ব। আমরা কোনো অন্যায় করিনি, অন্যায় করতে আমরা দেবো না। এখন থেকে যেখানেই বাঁধা সেখানেই প্রতিরোধ করতে হবে।

আফরোজা আব্বাস বলেন, চিত্তরঞ্জন দাশের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ, যুব লীগের ৩০ জন নেতাকর্মী এই হামলা চালায়। সবুজবাগ থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহরিয়ার, যুব মহিলা লীগের রিনা খানম, সবুজবাগ থানার যুব লীগের হিল্টন, রিপন, নাদিম, মঞ্জু কমিশনারের মেয়ে তানিয়া, আওয়ামী লীগের রাজ্জাক, শ্রমিকলীগের জাহাঙ্গীর প্রমুখ অতর্কিতে এই হামলা চালাল। আমরা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না, সরকার থেকে তো নয়ই। আপনাদের কাছে বিচার চাই। আমাদের একমাত্র ভরসা এই সাংবাদিক ভাইয়েরা। আপনাদের কাছে কোনো পপাতিত্ব আচরণ চাই না। নিরপেভাবে সহায়তা চাই।

ইসির কাছে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিইসি ও সচিবকে ফোন করেছি উনারা রিসিভ করেনি। কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে জানিয়েছি। থানায় ডায়েরি করব। না নিলে আদালতে যাবো। কারণ এভাবে চলতে পারে না। ওরা মারবে আর আমরা মার খেয়ে যাবো এটা তো হয় না, আমাদের তো প্রতিরোধ করতে হবে। প্রচারণা অব্যাহত রাখবেন কি না জানতে চাইলে আফরোজা আব্বাস বলেন, অবশ্যই আমরা প্রচারণা চালাব। দেখি না ওরা কত আসতে পারে।

ঢাকা-৮ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমার সহধর্মিণী প্রচারণার সময়ে তার ওপর মারাত্মকভাবে হামলা হয়েছে। এটা বীভৎস ও নারকীয়। আওয়ামী লীগ তাদের স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। আমি এই এলাকার এই মাটির সন্তান। এখান থেকে আমাদের বিএনপি পরিবারের কোনো সদস্যকে আওয়ামী সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করে সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা তারা খুব ভালোভাবে জানে। নির্বাচন এক দিন থাকবে না, আমাদের প্রার্থিতাও থাকবে না, আমাদেরকে এলাকায় বসবাস করতে হবেÑ এটা সবার মনে রাখা উচিত। আমি ভেবেছিলাম, এই এলাকায় অন্তত কেউ কিছু করবে না। আমি জানি না, কোনো অপশক্তির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে তারা আজকে বিএনপির প্রার্থীর গায়ে হাত তোলার মতো, জীবননাশের প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আমার সহধর্মিণী কোনো রকমের বেঁচে যান।

তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে আঘাত করার চেষ্টা করে জীবনহানির ল্েয। গাড়ির ড্রাইভার প্রতিহতের চেষ্টা করলে সে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে আছে। তার ২২টি স্টিচ লেগেছে, উরুতে হাড় বেরিয়ে গেছে। শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রা করা আমার অধিকার। এ থেকে তারা বঞ্চিত করছে। আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করার গ্যারান্টি পাচ্ছি না। আমরা স্বাভাবিক মৃত্যু ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রার গ্যারান্টি পাচ্ছি না। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে তার বাসা থেকে বেরুনোর সময়ে আটজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করার কথাও জানান।


Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top