এফ-১৬ নয়, পাকিস্তানি জেএফ-১৭-এ বিধ্বস্ত ভারতীয় মিগ-২১

বালাকোটে ভারতের হামলার জবাব দিতে যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ নয়, বরং পাকিস্তানের নিজস্ব জেএফ-১৭ থান্ডার যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছিল। এমন দাবি আবারো করেছে পাকিস্তান।

রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুরের দাবি, বালাকোটের পর পাকিস্তান যুদ্ধবিমানের যে ধ্বংসাবশেষ প্রমাণ হিসাবে দেখিয়েছিল ভারত, তা আদৌ মার্কিন প্রযুক্তিতে তৈরি এফ-১৬ নয়। ওই যুদ্ধবিমান আসলে চীনের সঙ্গে যৌথ প্রযুক্তিতে তৈরি জেএফ-১৭ থান্ডার-এর অংশ। ওই অভিযানের ফুটেজও তাদের কাছে রয়েছে বলে দাবি মেজর জেনারেল গফুরের।

ভারতের দাবি ছিল, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে এআইএম-১২০ এএমআরএএএম (অ্যাডভান্সড মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল) ছুড়েছিল পাকিস্তান। ভারতীয় বিমানবাহিনীর আরো দাবি, এতে আমেরিকার সঙ্গে ওই যুদ্ধবিমান কেনার সময় স্বাক্ষর করা মউ চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। কারণ, ওই চুক্তি অনুযায়ী, আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে ওই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা যাবে না। পাকিস্তান আদৌ চুক্তিভঙ্গ করেছে কি না, তা ইতিমধ্যেই খতিয়ে দেখছে আমেরিকা। এ নিয়ে পাকিস্তানের কাছে আরো তথ্যাদি চাওয়া হবে বলে ঘোষণাও করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। এই আবহে পাকিস্তানের দাবি, ওই অভিযানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ব্যবহারই হয়নি।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হানার জের ধরে পাকিস্তানের বালাকোটে অভিযান চালায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমান। ২৬ ফেব্রুয়ারির ওই অভিযানে জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ধ্বংসের দাবি করে ভারত। তবে ভারতের দাবি নস্যাৎ করে পাকিস্তানের পাল্টা দাবি ছিল, ওই অভিযানে কোনো রকমের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, ফাঁকা জায়গায় বোমা ফেলে চলে যায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান। বালাকোট অভিযানের এক দিন পরেই ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালায় পাকিস্তান বিমানবাহিনী। ওই হামলার সময় ভারতের দুটি বিমান বিধ্বস্ত করার দাবি করে পাকিস্তান। একটি বিমান পাকিস্তান ভূখণ্ডে বিধ্বস্ত হয়। ওই বিমানের পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকেও গ্রেফতার করে পাকিস্তান। পরে তারা ওই পাইলটকে ফেরত দেয় পাকিস্তান।

ভারতের দাবি ছিল, পাকিস্তানের এফ-১৬ বিমানের ধ্বংসাবশেষও তাদের মাটিতে পড়েছে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ পরিদপ্তর আইএসপিআর’র প্রধান মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে যদি কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাহলে তা যেন উভয় দেশের জন্য সমানভাবে কার্যকর করা হয়। পাকিস্তানের হাত বেঁধে রেখে ভারতকে একা ছেড়ে দেয়া যাবে না।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, পাকিস্তান কেবল নিজেদের আত্মরক্ষার্থেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করেছে। ১৯৯৮ সালে ভারত পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি অর্জন করেছে। পাকিস্তানের হাতে এ শক্তি থাকায় উভয় দেশের মধ্যে কোনো বড় যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা যায়নি।

পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলোর এ অস্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয় জানিয়ে আসিফ গফুর বলেন, আমাদের পারমাণবিক শক্তি ভারতীয় উসকানি দমনের জন্য অন্যতম সহায়ক।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top