লক্ষীপুর জেলার রায়পুরে সানা উল্লাহ (৫৮) নামের এক আওয়ামীলীগ নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
(২৮ আগষ্ট) সোমবার সকালে উপজেলার বামনী ইউনিয়নের পূর্ব সাগরদী গ্রামের কাজী বাড়ী থেকে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা। মৃত সানা উল্লাহ একই এলাকার মৃত শাহাদাত উল্লাহ ছেলে ও সাগর্দী গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা ও স্থানীয় চা দোকানী। তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, মেয়ের বিয়ে, ছেলেকে বিদেশ পাঠানো এবং পরিবারের ব্যয় বাড়তে থাকায় গত এক বছর ধরে রায়পুরের মীরগঞ্জ বাজারে অবস্থিত বেসরকারি এনজিও সংস্থা প্রজন্ম, রিক ও এসো গড়ি উন্নয়নসহ ১৪টি এনজিও থেকে ঋণ নেন চা সানা উল্লাহ। কয়েকদিন ধরে রিক, প্রজন্ম ও এসো গড়ি উন্নয়নের ম্যানেজার তাদের সংস্থার ঋণ পরিশোধ করার জন্য নানান ভাবে চাপ সৃষ্টি করেন সানাউল্লাহসহ তার পরিবারকে। এ ঋণ পরিশোধ নিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন।
ঘটনার দিস সোমবার সকালে সানাউল্লাহ তার চা দোকানে যান। এরপর থেকে তাঁর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। সকাল নয়টার দিকে এক ব্যক্তি চা খেতে এসে তাঁর দোকানের শার্টার বন্ধ দেখেন। তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে বসতঘরের পাশে পুকুর পাড়ে আম গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সানা উল্যাহ মরদেহ ঝুলতে দেখেন। এলাকাবাসী সকাল ১১ টার দিকে পুলিশকে খবর দিলে দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় এনজিও রিকের ম্যানেজার তরিকুল, এসো গড়ি উন্নয়নের ম্যানেজার সালাউদ্দিন ও প্রজন্মের ম্যানেজার সফিক উদ্দিন বলেন, আমাদের সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছেন চা দোকানী সানা উল্লাহ। কিস্তির টাকা পরিশোধে তাকে ফোন দিয়েছি। কোন চাপ সৃষ্টি করা হয়নি।
ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল আলম সুমন বলেন, আওয়ামীলীগ নেতা সানা উল্যাহ চা বিক্রি করে যা আয় করতেন, তা দিয়ে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। স¤প্রতি এক ছেলে বিদেশ পাঠানো ও এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এক ছেলের লেখাপড়া এবং সংসারের ব্যয় মেটাতে তিনি কয়েকটি এনজিও এবং কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকেও সাপ্তাহিক পরিশোধের শর্তে টাকা ধারও নেন। ঋণের চাপে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ায় সানা উল্যাহ আত্মহত্যা করেন বলে আমরা ধারণা করছি।
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, বসতঘরের পাশে পুকুর পাড়ে আম গাছে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় সানা উল্যাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।