আরেক জাহালম হওয়ার আশঙ্কায় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট

নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁ থানার একটি মামলায় আসামীর সঙ্গে নামের মিল থাকায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ঝালকাঠির নলছিটির মো. রুহুল আমিন খান। তিনি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট।

নলছিটি উপজেলার মালুহার গ্রামের মৃত আশ্রাফ আলী খানের ছেলে রুহুল আমিনের বয়স বর্তমানে ৫০ বছর। সোনারগা থানার যে মামলায় রুহুল আমিনের নামে নলছিটি থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এসেছে সেই রহুল আমিনের বয়স ৩০ বছর। এ অবস্থায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন নলছিটির মো. রুহুল আমিন খান ও তার পরিবারের সদস্যরা।

শনিবার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে হয়রানীর হাত থেকে বাচতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১৫ সালের ৪ জুলাই নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার পুরাতন কাঁচপুর এলাকায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ৩০০ বস্তা হোলসিম সিমেন্টসহ একটি ট্রাক গতিরোধ করে কাগজপত্র দেখতে চায়। ট্রাকের চালক ও হেলপার কাগজপত্র নিয়ে ডিবি পুলিশের মাইক্রোবাসের কাছে গেলে কয়েকজন ডিবি পুলিশ ট্রাকটি চালিয়ে ঢাকার দিকে নিয়ে যায়। চালক ও হেলপার চিৎকার শুরু করলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ধারীরা মাইক্রোবাসটিও চালিয়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তেজগাঁও থেকে সিমেন্ট ভর্তি ট্রাক উদ্ধার করে ও দুইজনকে আটক করে। এ ব্যাপরে সিমেন্ট ও ট্রাকের মালিকপক্ষ সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করে।

মামলায় আটক দুইজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। গ্রেফতার দুইজন নিজেদেরকে মোশারফ হোসেন, পিতা আলী হোসেন, গ্রাম আজিমপুর, খানা কাজিরহাট, জেলা বরিশাল এবং অপরজন মো. রহুল আমিন, পিতা মৃত আশ্রাফ আলী খান, গ্রাম মালুহার, থানা নলছিটি, জেলা ঝালকাঠি বলে জানায়।

পরে সোনারগাঁ থানা পুলিশ আসামীদের নাম ঠিকানা সঠিকভাবে যাচাই বাছাই না করে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগপত্রের পর আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক হন কথিত মো. রুহুল আমিন। মামলাটি বিচারের জন্য নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৃতীয় আদালতে আসলে বিচারক পলাতক আসামী মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। কয়েকমাস আগে নলছিটি থানায় সেই গ্রেফতারি পরোয়ানা আসে। নলছিটি থানা পুলিশ মো. রহুল আমিনকে খুঁজতে অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. রুহল আমিন খানের বাড়িতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। গ্রেফতার থেকে বাঁচতে মো. রহুল আমিন খানের পরিবারের সদস্যরা নলছিটি থানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নারায়ণগঞ্জ থেকে মামলার কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিস্তারিত জানতে পারেন।

মো. রুহুল আমিন খান জানান, তিনি ২০০৯ সালের ৫ মে সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদ থেকে অবসরগ্রহণ করেন। তিনি কখনও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ যাননি। যে মামলায় ওয়ারেন্ট এসছে সেখানে আসামীর নাম মো. রুহুল আমিন বয়স ৩০, আর আমার নাম মো. রুহুল আমিন খান, বয়স ৫০। তবে বাবার নাম এবং গ্রামের ঠিকানায় মিল রয়েছে। যার কারণে নলছিটি থানা পুলিশ আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে আমি গাঢাকা দিয়ে থাকছি।

রুহুল আমিন খান বলেন, মূল অপরাধী আইনের হাত থেকে বাঁচতে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়ে তার নাম ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। এ হয়রানি থেকে বাঁচতে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নারায়ণগঞ্জ আদালত এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

নলছিটি থানার ওসি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, রুহুল আমিনের নামে একটি গ্রেফতারি পরোয়ানা আমাদের কাছে এসেছে। কিন্তু আসামীর বয়সের সাথে মিল পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা বিষয়টি সোনারগাঁ থানাকে জানিয়েছি।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top