অবস্থা ভালো হলে মধ্য এপ্রিলেই দেশে ফিরবেন কাদের

অবস্থা ভালো হলে এপ্রিলের মাঝামাঝিতেই দেশে ফিরতে পারেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি এখন সিংঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আছেন। এরই মধ্যে তার হার্টের বাইপাস সার্জারি সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে পোস্ট অপারেটিভ নিবিড় পরিচর্যায় রয়েছেন। দুই-একদিনের মধ্যে তাকে কেবিনে পাঠানো হতে পারে। আর সব মিলিয়ে মধ্য এপ্রিলের দিকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলে তার দেশে ফেরা সম্ভব হবে।

ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসার সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশি চিকিৎসক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ও নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী খবরটি নিশ্চিত করেছেন। বর্তমানে তিনি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালেই অবস্থান করছেন।

ডা. রিজভী জানান, শুক্রবার (২২ মার্চ) স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায়, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় মেডিকেল বোর্ডের সাথে তার কথা হয়। তারা বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। অপারেশন পরবর্তী সংকটও কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। অপারেশনের পরে তার যে সাপোর্টগুলো দেয়া হয়েছিল, বিশেষ করে আরভিপি মেশিন আজ (শুক্রবার) খুলে ফেলা হয়েছে।

ডা. আবু নাসার রিজভী আরও জানান, দুই-এক দিনের মধ্যে ওবায়দুল কাদেরের শরীরে লাগানো ট্রাকিয়াল টিউবটিও খুলে নেয়া হবে বলেই তাকে বলেছেন তার চিকিৎসকরা। এরপরই তাকে কেবিনে নেয়া হবে।

অপরেশনের পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর হার্ট খুব ভালো কাজ করছে, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে বিএমএসএসইউ’র চিকিৎসক ডা. রিজভী এই তথ্য জানিয়েছেন । দিনে দিনে ওবায়দুল কাদের সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেও জানান এই চিকিৎসক।

সার্জারির পরে আরও কিছুদিন হাসপাতালে রেখে শারীরিক অবস্থার রিভিউ করা হবে জানিয়ে রিজভী আরও বলেন, এ জন্য এক সপ্তাহ বা দশদিনের মতো কেবিনে রেখে হোটেল অথবা বার্থে পাঠানো সম্ভব হবে। এর সপ্তাহ খানেক পরে একটি ফলোআপ হবে। আর সেটি ভালোভাবে সম্পন্ন হলে মধ্য এপ্রিলে তাকে দেশে নেয়া সম্ভব হবে।

এই চিকিৎসক বলেন, ওদের কথায় যতটুকু বুঝতে পারছি, হয়তো এপ্রিলের মধ্যভাগে কাদের ভাই সুস্থ হয়ে দেশে ফিরতে পারবেন।

গত ৩ মার্চ ভোররাতে ঢাকায় নিজ বাড়িতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। সেখানে দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে তিনটি বড় ব্লক ধরা পড়ে। এরমধ্যে একটি ব্লক স্টেন্টিংয়ের (রিং পরানো) মাধ্যমে দ্রুত অপসারণ করেন চিকিৎসকরা। তাকে দেখতে দ্রুত হাসপাতালে ছুটে যান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ডেকে পাঠানোয় পরের দিন ঢাকায় উড়ে আসেন ভারতের প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠী। তারই পরামর্শে ও অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে ৪ মার্চ বিকালে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

সে রাতেই একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা শুরু করেন মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

গত ২০ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি সম্পন্ন হয়। সার্জারি করেছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিনিয়র সদস্য কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. সিবাস্টিন কুমার সামি। ডা. ফিলিপ কোহে এই চিকিৎসা বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top